কক্সবাজারের টেকনাফ
সীমান্তে ইয়াবা, মানবপাচার ও নানা ধরনের চোরাচালান রোধে কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে
বিজিবি। নাফ ট্যুরিজম পার্ক এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে একটি অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ
পোস্ট, যা সীমান্ত পাহারায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন
পোস্ট চালুর অংশ হিসেবে গত শনিবার ভোর থেকে টানা প্রায় ১৬ ঘণ্টার বিশেষ অভিযানে
নাফ নদীর মাঝসীমা ও জালিয়ারদ্বীপ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯৪ হাজার ইয়াবাসহ তিনজন
মাদক পাচারকারীকে আটক করে বিজিবি।
আজ
শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে টেকনাফ ব্যাটালিয়নে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য
জানান বিজিবির ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান।
অনুষ্ঠানে
মেজর মো. শাহাদাত হোসেন শুভ ও লে. কমান্ডার মো. সাদিক রাফি উপস্থিত ছিলেন।
অধিনায়ক
জানান, ২১ নভেম্বর ভোরে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারিতে মায়ানমার সীমান্ত থেকে নাফ নদী
পার হয়ে আসা দুজনকে শনাক্ত করা হয়। দ্রুত নৌ-পেট্রল দল অভিযান পরিচালনা করে
জালিয়ারদ্বীপের কাছে ৪৪ হাজার ইয়াবাসহ মায়ানমারের নাগরিক মো. ইব্রাহিমকে আটক করে।
অপরজন কেওড়া জঙ্গলে পালিয়ে গেলে আবারও চিরুনি অভিযান শুরু হয়।
পরে
দুপুর ও সন্ধ্যায় মায়ানমারের নাগরিক মো. জুনায়েদ এবং টেকনাফের আব্দুর রাজ্জাককে
আটক করা হয়। তাদের তথ্য অনুযায়ী, কেওড়া বাগানের একটি গর্তে লুকানো ৫০ হাজার ইয়াবা
উদ্ধার করে বিজিবি।
এ
ছাড়া মেরিন ড্রাইভের হাবিরছড়া এলাকা থেকে আরো একজন মো. আরিফের মোটরসাইকেল তল্লাশি
করে ১২০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
সীমান্ত
সুরক্ষা ও চোরাচালান দমনে বিজিবির অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
বিজিবির
এক কর্মকর্তা জানায়, নাফ নদী-পার্শ্ববর্তী এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই মাদক ও মানব
পাচারের কারণে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। তাই নাফ ট্যুরিজম পার্ক
এলাকায় একটি অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ পোস্ট স্থাপন করে টহল, নজরদারি ও প্রযুক্তিভিত্তিক
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করা হয়েছে।
তিনি
বলেন, নতুন পোস্ট চালুর পর থেকেই অভিযান জোরদার হয়েছে এবং এরই মধ্যে বেশ কিছু
সাফল্য এসেছে।
স্থানীয়
বাসিন্দারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিনের আতঙ্ক কিছুটা হলেও কমবে।
এক
যুবক বলেন, এখানে প্রায়ই গুলির শব্দ শোনা যেত। এখন পোস্ট হওয়ার পর এলাকায়
নিরাপত্তার অনুভূতি পাওয়া যাচ্ছে।
বিজিবির
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায়
পরিচালিত বিভিন্ন অভিযানে ১২৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া মানব পাচারের শিকার ২৮৫
জনকে উদ্ধার, ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬৯টি হাতবোমা, প্রায় ৩ কেজি আইস এবং প্রায় ১৭৪
কোটি টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫১ লাখের বেশি ইয়াবা রয়েছে।
উল্লেখ্য,
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নাফ ট্যুরিজম পার্ককে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার
পরিকল্পনা অনুমোদন দেয় সরকার। সেখানে হোটেল, কেবল কার, ঝুলন্ত সেতু, ভাসমান জেটি,
পানির নিচে রেস্টুরেন্টসহ নানা স্থাপনা নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু ২০২৩ সালে মিয়ানমারের আপত্তির কারণে ভরাট কাজ বন্ধ হয়ে এলাকাটি পরিত্যক্ত
অবস্থায় পড়ে থাকে। পরে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়তে থাকলে বিজিবি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানে
অস্থায়ী পোস্ট স্থাপন করে।
এনএম/ধ্রুবকন্ঠ
.png)
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২২ নভেম্বর ২০২৫
কক্সবাজারের টেকনাফ
সীমান্তে ইয়াবা, মানবপাচার ও নানা ধরনের চোরাচালান রোধে কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে
বিজিবি। নাফ ট্যুরিজম পার্ক এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে একটি অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ
পোস্ট, যা সীমান্ত পাহারায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন
পোস্ট চালুর অংশ হিসেবে গত শনিবার ভোর থেকে টানা প্রায় ১৬ ঘণ্টার বিশেষ অভিযানে
নাফ নদীর মাঝসীমা ও জালিয়ারদ্বীপ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯৪ হাজার ইয়াবাসহ তিনজন
মাদক পাচারকারীকে আটক করে বিজিবি।
আজ
শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে টেকনাফ ব্যাটালিয়নে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য
জানান বিজিবির ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান।
অনুষ্ঠানে
মেজর মো. শাহাদাত হোসেন শুভ ও লে. কমান্ডার মো. সাদিক রাফি উপস্থিত ছিলেন।
অধিনায়ক
জানান, ২১ নভেম্বর ভোরে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারিতে মায়ানমার সীমান্ত থেকে নাফ নদী
পার হয়ে আসা দুজনকে শনাক্ত করা হয়। দ্রুত নৌ-পেট্রল দল অভিযান পরিচালনা করে
জালিয়ারদ্বীপের কাছে ৪৪ হাজার ইয়াবাসহ মায়ানমারের নাগরিক মো. ইব্রাহিমকে আটক করে।
অপরজন কেওড়া জঙ্গলে পালিয়ে গেলে আবারও চিরুনি অভিযান শুরু হয়।
পরে
দুপুর ও সন্ধ্যায় মায়ানমারের নাগরিক মো. জুনায়েদ এবং টেকনাফের আব্দুর রাজ্জাককে
আটক করা হয়। তাদের তথ্য অনুযায়ী, কেওড়া বাগানের একটি গর্তে লুকানো ৫০ হাজার ইয়াবা
উদ্ধার করে বিজিবি।
এ
ছাড়া মেরিন ড্রাইভের হাবিরছড়া এলাকা থেকে আরো একজন মো. আরিফের মোটরসাইকেল তল্লাশি
করে ১২০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
সীমান্ত
সুরক্ষা ও চোরাচালান দমনে বিজিবির অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
বিজিবির
এক কর্মকর্তা জানায়, নাফ নদী-পার্শ্ববর্তী এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই মাদক ও মানব
পাচারের কারণে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। তাই নাফ ট্যুরিজম পার্ক
এলাকায় একটি অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ পোস্ট স্থাপন করে টহল, নজরদারি ও প্রযুক্তিভিত্তিক
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করা হয়েছে।
তিনি
বলেন, নতুন পোস্ট চালুর পর থেকেই অভিযান জোরদার হয়েছে এবং এরই মধ্যে বেশ কিছু
সাফল্য এসেছে।
স্থানীয়
বাসিন্দারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিনের আতঙ্ক কিছুটা হলেও কমবে।
এক
যুবক বলেন, এখানে প্রায়ই গুলির শব্দ শোনা যেত। এখন পোস্ট হওয়ার পর এলাকায়
নিরাপত্তার অনুভূতি পাওয়া যাচ্ছে।
বিজিবির
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায়
পরিচালিত বিভিন্ন অভিযানে ১২৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া মানব পাচারের শিকার ২৮৫
জনকে উদ্ধার, ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬৯টি হাতবোমা, প্রায় ৩ কেজি আইস এবং প্রায় ১৭৪
কোটি টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫১ লাখের বেশি ইয়াবা রয়েছে।
উল্লেখ্য,
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নাফ ট্যুরিজম পার্ককে অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার
পরিকল্পনা অনুমোদন দেয় সরকার। সেখানে হোটেল, কেবল কার, ঝুলন্ত সেতু, ভাসমান জেটি,
পানির নিচে রেস্টুরেন্টসহ নানা স্থাপনা নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু ২০২৩ সালে মিয়ানমারের আপত্তির কারণে ভরাট কাজ বন্ধ হয়ে এলাকাটি পরিত্যক্ত
অবস্থায় পড়ে থাকে। পরে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়তে থাকলে বিজিবি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানে
অস্থায়ী পোস্ট স্থাপন করে।
এনএম/ধ্রুবকন্ঠ
.png)
আপনার মতামত লিখুন