ময়মনসিংহের ভালুকায় কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও পরবর্তীতে মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।শনিবার (২০ ডিসেম্বর) র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৪) এবং জেলা পুলিশ পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মো. লিমন সরকার (১৯), মো. তারেক হোসেন (১৯), মো. মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬), মো. আজমল হাসান সগীর (২৬), মো. শাহিন মিয়া (১৯) ও মো. নাজমুল (২১)।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার ‘পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড’ কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হলে মরদেহটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।নিহত দিপু চন্দ্র দাসের পরিবার এই হত্যাকাণ্ডকে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছে। নিহতের বাবা রবি চন্দ্র দাস ও বোন চম্পা দাসের অভিযোগ, কারখানার উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে দিপুকে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দাবি, দিপু একজন শিক্ষিত ও সচেতন মানুষ ছিলেন এবং তিনি কোনোভাবেই ধর্ম অবমাননার মতো কাজ করতে পারেন না।এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। তিনি বলেন, "কেন ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে উত্তেজিত জনতা নিজেরা বিচার করতে গেল, তা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"গ্রেপ্তারকৃতদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এলাকায় বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।