ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

গাজায় দুর্ভিক্ষ না থাকলেও সংকটাপন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে



গাজায় দুর্ভিক্ষ না থাকলেও সংকটাপন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে
ছবি : সংগৃহীত

ইসরাইলের বর্বরতায় স্থবির হয়ে পড়া গাজা অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ কেটে গেছে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) তবে সামনে আরও বাজে পরিস্থিতি আসন্ন ভেবে শঙ্কা দেখছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস 

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, যুদ্ধবিরতির পর মানবিক বাণিজ্যিক খাদ্য সরবরাহ কিছুটা বাড়ায় পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তবে আইপিসি সতর্ক করে বলেছে, যদিও দুর্ভিক্ষ আপাতত কাটিয়ে ওঠা গেছে, তবুও গাজার পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত সংকটপূর্ণ।

সংস্থাটি জানিয়েছে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতেযদি আবার যুদ্ধ শুরু হয় এবং মানবিক বাণিজ্যিক সরবরাহ বন্ধ হয়তাহলে ২০২৬ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত পুরো গাজা উপত্যকা পুনরায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

চার মাস আগে সংস্থাটি জানিয়েছিল, গাজার প্রায় লাখ ১৪ হাজার মানুষ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ, দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির মধ্যে। সে সময়ের সেই মূল্যায়ন ইসরাইল প্রত্যাখ্যান করেছিল। 

গাজায় দুর্ভিক্ষ কেটে যাওয়ার কথা জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আপাতত নেই। তবে পরিস্থিতির উন্নতিভীষণভাবে অনিশ্চিত তিনি বলেন, এখন অনেক বেশি মানুষ ন্যূনতম খাদ্য পাচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ আসছে না।

তবে আগেরবারের মতো এবারও এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেছে ইসরাইল। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অধীনস্থ সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা কোগাট দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে। এর প্রায় ৭০ শতাংশই খাদ্যপণ্য।

তবে হামাস এই দাবিকে অস্বীকার করে জানিয়েছে, প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছেএই তথ্য সঠিক নয়। বাস্তবে এর চেয়ে অনেক কম সহায়তা পৌঁছাচ্ছে।

শুক্রবার আইপিসির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কোগাট অভিযোগ করে, সংস্থাটিভূমির বাস্তব চিত্র ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।কোগাটের দাবি, প্রতিবেদনে তথ্য সংগ্রহে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে এবং এমন কিছু সূত্রের ওপর নির্ভর করা হয়েছে, যা গাজায় প্রবেশ করা মানবিক সহায়তার পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে না।

ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইপিসির প্রতিবেদনে যেটুকু দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি সহায়তা গাজায় প্রবেশ করছে। মন্ত্রণালয়ের দাবি, চলতি বছরের জুলাইয়ের পর থেকে গাজায় খাদ্যপণ্যের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

তবে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বারবার বলছে, গাজার মতো ছোট জনবহুল এলাকায় প্রয়োজনের তুলনায় এখনো পর্যাপ্ত সহায়তা ঢুকছে না। তাদের অভিযোগ, ইসরাইল প্রয়োজনীয় অনেক সামগ্রী গাজায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই। দখলদার দেশটির দাবি, সমস্যা মূলত খাদ্য বিতরণে অব্যবস্থাপনা।

 


এমএইছ/ধ্রুবকন্ঠ

বিষয় : ইসরাইল গাজা হামাস

আপনার মতামত লিখুন

ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫


গাজায় দুর্ভিক্ষ না থাকলেও সংকটাপন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে

প্রকাশের তারিখ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

featured Image

ইসরাইলের বর্বরতায় স্থবির হয়ে পড়া গাজা অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ কেটে গেছে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) তবে সামনে আরও বাজে পরিস্থিতি আসন্ন ভেবে শঙ্কা দেখছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস 

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, যুদ্ধবিরতির পর মানবিক বাণিজ্যিক খাদ্য সরবরাহ কিছুটা বাড়ায় পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তবে আইপিসি সতর্ক করে বলেছে, যদিও দুর্ভিক্ষ আপাতত কাটিয়ে ওঠা গেছে, তবুও গাজার পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত সংকটপূর্ণ।

সংস্থাটি জানিয়েছে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতেযদি আবার যুদ্ধ শুরু হয় এবং মানবিক বাণিজ্যিক সরবরাহ বন্ধ হয়তাহলে ২০২৬ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত পুরো গাজা উপত্যকা পুনরায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

চার মাস আগে সংস্থাটি জানিয়েছিল, গাজার প্রায় লাখ ১৪ হাজার মানুষ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ, দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির মধ্যে। সে সময়ের সেই মূল্যায়ন ইসরাইল প্রত্যাখ্যান করেছিল। 

গাজায় দুর্ভিক্ষ কেটে যাওয়ার কথা জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আপাতত নেই। তবে পরিস্থিতির উন্নতিভীষণভাবে অনিশ্চিত তিনি বলেন, এখন অনেক বেশি মানুষ ন্যূনতম খাদ্য পাচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ আসছে না।

তবে আগেরবারের মতো এবারও এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেছে ইসরাইল। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অধীনস্থ সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা কোগাট দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে। এর প্রায় ৭০ শতাংশই খাদ্যপণ্য।

তবে হামাস এই দাবিকে অস্বীকার করে জানিয়েছে, প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছেএই তথ্য সঠিক নয়। বাস্তবে এর চেয়ে অনেক কম সহায়তা পৌঁছাচ্ছে।

শুক্রবার আইপিসির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কোগাট অভিযোগ করে, সংস্থাটিভূমির বাস্তব চিত্র ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।কোগাটের দাবি, প্রতিবেদনে তথ্য সংগ্রহে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে এবং এমন কিছু সূত্রের ওপর নির্ভর করা হয়েছে, যা গাজায় প্রবেশ করা মানবিক সহায়তার পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে না।

ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইপিসির প্রতিবেদনে যেটুকু দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি সহায়তা গাজায় প্রবেশ করছে। মন্ত্রণালয়ের দাবি, চলতি বছরের জুলাইয়ের পর থেকে গাজায় খাদ্যপণ্যের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

তবে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বারবার বলছে, গাজার মতো ছোট জনবহুল এলাকায় প্রয়োজনের তুলনায় এখনো পর্যাপ্ত সহায়তা ঢুকছে না। তাদের অভিযোগ, ইসরাইল প্রয়োজনীয় অনেক সামগ্রী গাজায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই। দখলদার দেশটির দাবি, সমস্যা মূলত খাদ্য বিতরণে অব্যবস্থাপনা।

 


এমএইছ/ধ্রুবকন্ঠ


ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

“তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম”

কপিরাইট © ২০২৫ ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত