ভূমিকম্পের পর ‘ঘূর্ণিঝড়’ নিয়ে সতর্কবার্তা
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে গতকাল
শুক্রবারে। এরপর আজ শনিবার একের পর এক আফটার শকে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ
পুরো দেশবাসী। এর মধ্যেই এবার বঙ্গোপসাগরে বড় এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে বলে জানা যায়।আজ শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া
ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ এ তথ্য জানান।তিনি জানায়, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এটি আগামী
মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আঘাত হানতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে
দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আজ ২২ নভেম্বর পাওয়া সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুসারে
আগামী ২৫/২৬ নভেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে (আন্দামান ও নিকবার দ্বীপের দক্ষিণ পাশে)
একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এই লঘুচাপটি পর্যায়ক্রমে নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ
ও সর্বশেষে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।সর্বশেষ আবহাওয়া পূর্বাভাস
অনুসারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে শুরু করে বাংলাদেশের
চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী যে কোনো স্থানের ওপর দিয়ে উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা
করা যাচ্ছে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখ এর মধ্যে। সম্ভাব্য এই
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৩০ নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপরে
হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।’কৃষকদের
জন্য পরামর্শ দিয়ে গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ৫ তারিখ
পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপরে হালকা থেকে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাতের প্রবল আশঙ্কা করা
যাচ্ছে। ফলে জমিতে থাকা পাকা আমন ধান কাটা ও মাড়াই করা শেষ করার পরামর্শ দেওয়া
যাচ্ছে।শীতকালীন
শাক-সবজি চাষিরা সম্ভাব্য এই বৃষ্টিপাতের কথা মাথায় রেখে বীজ বোনা ও জমিতে সেচ
দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। নভেম্বর মাসের ৩০
তারিখ পর্যন্ত জন্য রোদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে পুরো দেশে। সমুদ্রগামী
জেলেদের জন্য পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখের পর থেকে উত্তর
বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উত্তাল হওয়া শুরু করার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে
উপকূলে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে। ২৯ নভেম্বরের পরে
নতুন করে সমুদ্রে মাছ ধরতে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, ২৮ তারিখের
পর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র উত্তাল হওয়া শুরুর আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ৩০ নভেম্বরের
থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্র প্রচণ্ড উত্তাল
থাকার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ফলে এই সময়ে পর্যটন-সম্পর্কিত ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ
দেওয়া যাচ্ছে।
এনএম/ধ্রুবকন্ঠ