দেশে ৩২ হাজার স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, একটা ছোট্ট মামলার জন্য ৩২ হাজার স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। আর প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য থাকলে সেই স্কুল চলবে কী করে? আমাদের সহকারী শিক্ষকরা প্রমোশন ছাড়াই শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন। আমরা তাদের প্রমোশন দিতে পারছি না।শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক ৩৩অফিসের আয়োজনে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট অংশীজনের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।৩২ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হলে নতুন করে আরও ৩২ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান হতো বলে মন্তব্য করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা।শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করতে সহশিক্ষা কার্যক্রমের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, সফল স্কুলের দৃষ্টান্ত থেকে ধারণা নিয়ে বাকি স্কুলগুলো নিজেদের উন্নত করতে পারে। শিক্ষকদের সাংগঠনিক ও একাডেমিক নেতৃত্ব দিয়ে নিজেকে হাজার হাজার শিশুর আদর্শ হিসেবে তুলে ধরতে পারেন।উপদেষ্টা বলেন, একটা স্কুলই হচ্ছে মূল কার্যকর ইউনিট। এর ওপরে যে কার্যকর ইউনিট রয়েছে থানা, জেলা, অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় বলেন বিষয়গুলো হচ্ছে সমন্বয় কিংবা সহযোগিতার জন্য। প্রকৃতপক্ষে মূল কাজটা পরিচালিত হয় আমাদের স্কুলগুলোতে। আর স্কুলগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধান শিক্ষক।তিনি বলেন, আমার হাতে যদি আরও ক্ষমতা থাকতো প্রত্যেকটা স্কুলে পুরোপুরি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতাম। আর যার নেতৃত্বে একজন প্রধান শিক্ষক কিন্তু একই সঙ্গে তাদের দায়বদ্ধতা থাকতো বছর শেষে বেইজমেন্ট এলাকায় কতজন শিক্ষার্থীকে তারা আকৃষ্ট করতে পেরেছে- তাদের স্কুলে এবং তাদের থেকে যে প্রোডাক্ট বের হয়ে আসছে, তা কতটুকু মানসম্মত এটার জন্য তারা অবশ্যই দায়বদ্ধ থাকবে। তারা তাদের কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে একটা স্বায়ত্তশাসন গঠন করবে এবং অন্য সব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হবে তাদের সহযোগিতা ও মনিটরিং করা। এটা এই মুহূর্তে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না; কিন্তু সত্যি যদি আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে চাই, জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন যেটা সুশৃঙ্খলা লাগবে, তাহলেই শুধু একটা দেশ আশা করা যায়। আর সেটা হতে পারে একটা প্রাথমিক বিদ্যালয়।মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তৌহিদুজ্জামান পাভেলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম ও সদর সার্কেল আবুল খায়ের প্রমুখ।মতবিনিময় সভায় মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন মৌলভীবাজার শহরের আলী আমজদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পূর্ণা রায় ভৌমিক, কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, শ্রীমঙ্গল ভাড়াউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্যাণ দেবসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা।
এমএইছ/ধ্রুবকন্ঠ