ভবন দুলে পড়লো, ভূমিকম্পে বাড়ল বিপদ
ভূমিকম্পের প্রভাবে
একটি পাঁচতলা ভবন হেলে পড়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৬টি পরিবার। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি
অপসারণে বারবার পৌরসভার কাছে অভিযোগ করেও সমাধান মেলেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।তবে ভবন হেলে পড়ার
বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন কুয়েট এমন
কোনো তথ্য দেয়নি যাতে ভবন ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়।জানা যায়, যশোর
শহরের রেল রোড বাইলেনে তিনতলা ভবনের মালিক মহিদুল ইসলাম ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল
ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবন অপসারণের জন্য পৌরসভার কাছে লিখিত আবেদন করেন। ভবনটি তার ভবনের
দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনের মালিক সাইফুল কালাম দীর্ঘদিন ধরে নানা
কৌশলে ভবন অপসারণে বাধা সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ মহিদুল ইসলামের।সম্প্রতি সংঘটিত
ভূমিকম্পের পর ভবনটির পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি, যা নতুন করে
শঙ্কা বাড়িয়েছে।মহিদুল ইসলামসহ
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নিয়ম লঙ্ঘন করে নির্মিত পাঁচতলা ভবনটি তাদের তিনতলা ভবনের
ওপর হেলে পড়েছে। ভবনটির মালিক সাইফুল ইসলাম কালাম কারও কথা না শুনে কাজ চালিয়ে
যান। এরপর পৌর কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকেও বিশেষজ্ঞরা এসে একই অভিমত
দেন এবং জানান, ভবনটির ফাউন্ডেশন যথাযথভাবে করা হয়নি।মহিদুল ইসলাম
বলেছেন, পৌরসভা থেকে ভবন অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হলে মালিক সাইফুল ইসলাম কালাম আইনি
কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি ২০২৩ সালে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে অপসারণে বাধা দেন।
১১টি শুনানির পর হাইকোর্ট মামলাটি খারিজ করে দিলেও ভবন মালিক আবারও কৌশলে স্থানীয়
আদালতে নতুন মামলা করেন।যশোর পৌরসভার
নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম শরীফ হাসান বলেন, ইঞ্জিনিয়াররা ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বললেও
ভবন মালিকের নানা কৌশল ও আইনি জটিলতায় অপসারণ সম্ভব হয়নি। বিষয়টি এখন আদালতের হাতে
রয়েছে এবং অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ আদালতে পেশ করা হবে।এদিকে স্থানীয়
বাসিন্দারা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তারা জানিয়েছেন, পূর্বেকার হেলে পড়া
ভবনটি পার্শ্ববর্তী ভবনের উপর আরও হেলে পড়েছে। নির্মাণ ত্রুটির কারণে দুর্বল হওয়া
ভবনটি ভূমিকম্পের ধকল সামলাতে পারেনি।মহিদুল ইসলাম বলেন,
দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চলছে, কিন্তু অপসারণ হয়নি। এখন ভূমিকম্পের পর ভবনের ফাটল
আরও বেড়েছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা ১২টি পরিবার আতঙ্কে দিন
কাটাচ্ছি।স্থানীয়দের দাবি,
আইনি জটিলতার দ্রুত নিরসন করে অবিলম্বে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি অপসারণ করা হোক, যাতে বড়
কোনো দুর্ঘটনার আগেই সাধারণ মানুষ রক্ষা পায়।এ বিষয়ে জানতে
ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনের মালিক সাইফুল ইসলাম কালাম বলেন, আমার ভবন ঠিকই আছে। যারা
আপনাকে এ তথ্য দিয়েছেন, তারা ভুল তথ্য সরবরাহ করেছেন। কুয়েট থেকে যে
পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল দেওয়া হয়েছে, তাতে ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়নি। যশোর পৌরসভা
বিনা কারণে আমাকে হয়রানি করছে। কুয়েটের রিপোর্ট কপি দিতে বললে তিনি তা দিতে
অস্বীকার করেন।
এমএম/ধ্রুবকন্ঠ