ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

ফেসবুকে এআই অশ্লীল ভিডিও : আইসিটি বিভাগের উদাসীনতায় বাড়ছে উদ্বেগ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে তৈরি অশ্লীল আলাপ ও বিকৃত কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়া এখন আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—এটি ক্রমেই একটি ভয়ংকর সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিচ্ছে। প্রযুক্তির এই ন্যাক্কারজনক অপব্যবহার সরাসরি সমাজের নৈতিক ভিতকে ধ্বংস করছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিকল্পিতভাবে যৌন বিকৃতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।এই ভিডিওগুলোতে অশালীন সংলাপ, বিকৃত কণ্ঠস্বর ও কৃত্রিম চরিত্র ব্যবহার করে এমন এক কদর্য বাস্তবতা তুলে ধরা হচ্ছে, যা সুস্থ সমাজব্যবস্থার জন্য মারাত্মক হুমকি। অনেক ক্ষেত্রে বাস্তব মানুষের ছবি ও কণ্ঠস্বর নকল করে ভিডিও বানানো হচ্ছে, যা চরমভাবে অনৈতিক, অপরাধমূলক এবং মানবিক মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত।বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট ভাষায় বলছেন, এসব কনটেন্ট কিশোর ও তরুণদের মানসিক বিকাশে বিষ ঢেলে দিচ্ছে। অল্প বয়সেই যৌন উত্তেজক ও বিকৃত উপস্থাপনার সঙ্গে পরিচিত হওয়ায় তাদের চিন্তাধারা বিকৃত হচ্ছে, পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ ভেঙে পড়ছে। এর পরিণতি হিসেবে বাড়ছে অবাধ্যতা, সহিংস আচরণ এবং সামাজিক সম্পর্কের অবক্ষয়।উদ্বেগজনকভাবে, এই অশ্লীল কনটেন্ট ছড়ানোর পেছনে একটি সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যারা ভিউ ও মুনাফার লোভে সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আরও ভয়াবহ বিষয় হলো—আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে এই অপরাধীরা প্রায় নির্বিঘ্নে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।আইনজ্ঞদের মতে, এআই দিয়ে তৈরি অশ্লীল ভিডিও কেবল নৈতিক অপরাধ নয়, এটি সাইবার অপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। বিদ্যমান সাইবার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ না হলে এই অপরাধ ভবিষ্যতে আরও ভয়ংকর রূপ নেবে।অভিভাবক সমাজও আজ চরম উদ্বেগে। সন্তানদের হাতে স্মার্টফোন থাকলেও ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতার অভাবে তারা প্রতিনিয়ত এই বিষাক্ত কনটেন্টের মুখোমুখি হচ্ছে। একদিকে পরিবার ভেঙে পড়ছে, অন্যদিকে সমাজ ধীরে ধীরে নৈতিক দিক থেকে দেউলিয়া হয়ে পড়ছে।বিশ্লেষকদের মতে, এখনই যদি কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে এআই প্রযুক্তি মানবকল্যাণের বদলে সমাজ ধ্বংসের অস্ত্রে পরিণত হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কর্তৃপক্ষের গাফিলতি বন্ধ করতে হবে, অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবারকে একযোগে এই অশ্লীল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।এআই প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণহীন হলে তা সভ্যতার জন্য আশীর্বাদ নয়, বরং অভিশাপে পরিণত হবে—এ বাস্তবতা এখন আর অস্বীকার করার সুযোগ নেই।  এনএম/ধ্রুবকন্ঠ

ফেসবুকে এআই অশ্লীল ভিডিও : আইসিটি বিভাগের উদাসীনতায় বাড়ছে উদ্বেগ