ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদিকে গুলি করার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলা দিয়ে পালিয়ে যায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ও মোটরসাইকেল চালক আলমগীর হোসেন। প্রযুক্তির কারসাজিতে পুলিশকে রাজধানীতে বিভিন্ন ভুয়া লোকেশনে ঘুরিয়ে তারা।তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাদির ওপর হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মূল সন্দেহভাজন হিসেবে ফয়সাল ও আলমগীরকে শনাক্ত করে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গতিবিধি অনুসরণ করতে থাকে। তবে সন্দেহভাজনরা মোবাইল ফোনসহ ডিজিটাল ডিভাইসগুলো সচল রাখলেও সেগুলো নিজেরা বহন করেনি। এসব ডিভাইস অন্য কোনোভাবে চালু রেখে বারবার সেগুলোর জায়গা পরিবর্তন করানো হচ্ছিল। আর পুলিশ তাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর অবস্থান ধরে ধরে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছিল। কিন্তু এসব অবস্থান ছিল ভুয়া। মূলত এই সময়ে তারা রাজধানী থেকে নিরাপদে বের হয়ে ময়মনসিংহ হয়ে হালুয়াঘাট পৌঁছায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।এর আগে হাদিকে গুলি করার পরই তারা পল্টনের কালভার্ট রোড থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে নয়াপল্টন হয়ে শাহবাগ, বাংলামটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট হয়ে আগারগাঁও এলাকা দিয়ে মিরপুরে পৌঁছায়।বিভিন্ন মাধ্যম বলছে, আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ও আলমগীর হোসেনের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু তারা দেশে আছে, না কি পালিয়ে গেছে—আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্পষ্ট করেনি।এদিকে, শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বর্তমানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে (এসজিএইচ) চিকিৎসাধীন। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সুচিকিৎসার জন্য একটি বিশেষায়িত মেডিকেল টিম গঠন করেছে, যারা মঙ্গলবার দুপুরে সব স্বাস্থ্যগত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানিয়েছে, হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন এবং অপরিবর্তিত রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, তিনি এখনো জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।সিঙ্গাপুরে হাদির চিকিৎসা পরিস্থিতি নিয়ে হাসপাতালটির চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরো সার্জন ও হাদির চিকিৎসায় যুক্ত ডা. আব্দুল আহাদ।এসজিএইচ-এর নিউরোসার্জনদের সর্বশেষ মূল্যায়ন অনুযায়ী, হাদির ব্রেনের ইস্কেমিক পরিবর্তন (রক্ত সরবরাহ কমে যাওয়া) এবং ইডেমা বা ফোলা এখনো কমেনি। চিকিৎসকদের কাছে একটি নির্দিষ্ট ‘টাইম উইন্ডো’ (সময়সীমা) এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হচ্ছে। এই সময়সীমার মধ্যেই শরীর ইতিবাচক সাড়া দিলে পরবর্তী উন্নতির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এনএম/ধ্রুবকন্ঠপুলিশকে ভুয়া লোকেশন ব্যবহার করে যেভাবে পালাল ফয়সাল ও আলমগীর