সাধারণভাবে
নির্বাচন পেছানো কাম্য নয়। তবে কোনো কারণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব না হলে দেশ
গুরুতর সংকটে পড়বে বলে জানিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি
আশ্বাস দিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে যদি জামায়াত নির্বাচিত হয়, তবে জাতীয় সরকার গঠন
করা হবে। নির্বাচনে ২০০ আসনে জিতলেও সেই সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না। আজ সোমবার (৮
ডিসেম্বর) দুপুরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকাস্থ দূতাবাসে আট দেশের দূতদের সঙ্গে সৌজন্য
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াত আমির এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর
রহমান বলেন, ‘পিআর আমাদের দাবি, আমরা এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। আমরা
যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হই এবং দেশসেবার সুযোগ পাই তখনো আমরা পিআর বাস্তবায়নে
আন্তরিকতার পরিচয় দেব।’
জামায়াত আমির
বলেন, ‘আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি, আমরা ধর্মকে ব্যবহার করি না। ইলেকশনের সময় নতুন করে যারা বেশি বেশি নামাজ শুরু করেন,
টুপি পরেন, তসবি হাতে নিয়ে ঘোরেন—ধর্মকে তারাই বোধ হয় ব্যবহার করেন। আমরা সারা বছর
তসবিহ হাতে নিয়ে ঘুরি না, তসবিহ বুকে নিয়ে ঘুরি।’
সাবেগ
প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশবাসী
তার (বেগম খালেদা জিয়া) অসুস্থতার জন্য তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া করছে।
যার যতটুকু শ্রদ্ধা-ভালোবাসা পাওয়া সে যেন এটা পায়, সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন,
‘আমিও তো মরব, আমরা কেউ তো চিরদিন থাকব না। আমাদের এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে
হবে। আমাদের বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সমাজের থাকা, চলা ও অচল হওয়ার কোনো সম্পর্ক থাকা
উচিত নয়।’
বৈঠকের
বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সাধারণ নির্বাচন ও রেফারেন্ডাম যদি একই দিনে হয়,
সেখানে কোনো প্রবলেম হবে কি না, জানতে চাওয়া হয়। আমরা বলেছি, আমাদের দেশের মানুষ
ততটা এখনো কনশাস (সচেতন) না।
এ
জন্য একই দিনে দুটো নির্বাচন হলে দুটি নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে,
ভোটার টার্নওভারও কম হতে পারে। এসব কারণ সামনে রেখেই আমরা বলেছিলাম—দুটো নির্বাচন
আলাদা আলাদা হওয়া উচিত। সে দাবি এখনো আমাদের আছে। সরকার ইচ্ছা করলে সে দাবি এখনো
বাস্তবায়ন করতে পারে।’
তিনি
আরও বলেন, ‘তারা (আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা) আরো জানতে চেয়েছেন, পিআরের (আনুপাতিক
প্রতিনিধিত্ব) ব্যাপারে আমাদের অবস্থান কী? আমরা বলেছি, পিআর আমাদের দাবি, আমরা
এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায়
গেলে, তখনো পিআর বাস্তবায়নে আন্তরিকতার পরিচয় দেব।’
আমির
আরও বলেন, ‘অতীতের যে কালচার, আমরা তো জিতে গেছি এখন আর পিআরের দরকার কী—এটাকে
আমরা পাল্টে দিতে চাই। মানুষ এখন অনেক রাজনৈতিক দলের কমিটমেন্টের (প্রতিশ্রুতি)
ওপর আস্থা রাখে না। তারা বলে, আপনারা তো কমিটমেন্ট রক্ষা করেন না। এই যে একটা
ব্যাড কালচার হয়ে গেছে, এটাকে পাল্টানোর দায়িত্ব কাউকে না কাউকে নিতে হবে, সেই
দায়িত্বটা আমরাই নিতে চাই।’
ডা.
শফিকুর রহমান বলেন, ‘আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা জানতে চেয়েছেন—সমাজের বিভিন্ন অংশের
মানুষের প্রতিনিধিত্ব কিভাবে হবে, সব মানুষের সিকিউরিটি কিভাবে নিশ্চিত হবে,
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানটা কিভাবে হবে? যদি আমরা নির্বাচিত হই, তাইলে প্রথমে ১০০
দিনে আমাদের জনগণের প্রতি কী বক্তব্য থাকবে, কী করণীয় থাকবে—এই বিষয়গুলো তারা
আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, আমাদের সবকিছুই ফ্রেম করা আছে, আমরা যখন
যেটা প্রযোজ্য সেটা সামনে রিলিজ (প্রকাশ) করব।’
জামায়াত
আমির বলেন, তারা একটা ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ দেখতে চান। আমরা বলেছি, জনগণের ভালোবাসায়
আমরা নির্বাচিত হলে সেই ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ আমরা গড়ব ইনশাআল্লাহ, আমরা কোনো দলকেই
বাদ দেব না। আগামী পাঁচ বছরে দেশের স্থিতিশীলতা, ইকোনমি ফিরিয়ে আনা, আইনের শাসন
সমাজে কায়েম করা এবং সমাজ থেকে দুর্নীতিকে নির্মূল করার জন্য আমাদের একটি জাতীয়
সরকারের প্রয়োজন। আমরা নির্বাচিত হলে সেই সরকারই গঠন করব।
তিনি
আরও বলেন, আমরা ইলেকশন (নির্বাচন) পেছানোর
কোনো সুযোগ আছে মনে করি না, এবং এটি উচিত নয় মনে করি। আমরা মনে করি, ফেব্রুয়ারির
ঘোষিত এই টাইমলাইনের ভেতরে নির্বাচন হওয়াই দেশের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এর সামান্য
কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দেশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এনএম/ধ্রুবকন্ঠ
বিষয় : জাতীয় ডা. শফিকুর রহমান ২০০ আসন জামায়াত
.png)
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
সাধারণভাবে
নির্বাচন পেছানো কাম্য নয়। তবে কোনো কারণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব না হলে দেশ
গুরুতর সংকটে পড়বে বলে জানিয়েছেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি
আশ্বাস দিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে যদি জামায়াত নির্বাচিত হয়, তবে জাতীয় সরকার গঠন
করা হবে। নির্বাচনে ২০০ আসনে জিতলেও সেই সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না। আজ সোমবার (৮
ডিসেম্বর) দুপুরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকাস্থ দূতাবাসে আট দেশের দূতদের সঙ্গে সৌজন্য
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াত আমির এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর
রহমান বলেন, ‘পিআর আমাদের দাবি, আমরা এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। আমরা
যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হই এবং দেশসেবার সুযোগ পাই তখনো আমরা পিআর বাস্তবায়নে
আন্তরিকতার পরিচয় দেব।’
জামায়াত আমির
বলেন, ‘আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি, আমরা ধর্মকে ব্যবহার করি না। ইলেকশনের সময় নতুন করে যারা বেশি বেশি নামাজ শুরু করেন,
টুপি পরেন, তসবি হাতে নিয়ে ঘোরেন—ধর্মকে তারাই বোধ হয় ব্যবহার করেন। আমরা সারা বছর
তসবিহ হাতে নিয়ে ঘুরি না, তসবিহ বুকে নিয়ে ঘুরি।’
সাবেগ
প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশবাসী
তার (বেগম খালেদা জিয়া) অসুস্থতার জন্য তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া করছে।
যার যতটুকু শ্রদ্ধা-ভালোবাসা পাওয়া সে যেন এটা পায়, সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন,
‘আমিও তো মরব, আমরা কেউ তো চিরদিন থাকব না। আমাদের এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে
হবে। আমাদের বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সমাজের থাকা, চলা ও অচল হওয়ার কোনো সম্পর্ক থাকা
উচিত নয়।’
বৈঠকের
বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সাধারণ নির্বাচন ও রেফারেন্ডাম যদি একই দিনে হয়,
সেখানে কোনো প্রবলেম হবে কি না, জানতে চাওয়া হয়। আমরা বলেছি, আমাদের দেশের মানুষ
ততটা এখনো কনশাস (সচেতন) না।
এ
জন্য একই দিনে দুটো নির্বাচন হলে দুটি নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে,
ভোটার টার্নওভারও কম হতে পারে। এসব কারণ সামনে রেখেই আমরা বলেছিলাম—দুটো নির্বাচন
আলাদা আলাদা হওয়া উচিত। সে দাবি এখনো আমাদের আছে। সরকার ইচ্ছা করলে সে দাবি এখনো
বাস্তবায়ন করতে পারে।’
তিনি
আরও বলেন, ‘তারা (আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা) আরো জানতে চেয়েছেন, পিআরের (আনুপাতিক
প্রতিনিধিত্ব) ব্যাপারে আমাদের অবস্থান কী? আমরা বলেছি, পিআর আমাদের দাবি, আমরা
এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায়
গেলে, তখনো পিআর বাস্তবায়নে আন্তরিকতার পরিচয় দেব।’
আমির
আরও বলেন, ‘অতীতের যে কালচার, আমরা তো জিতে গেছি এখন আর পিআরের দরকার কী—এটাকে
আমরা পাল্টে দিতে চাই। মানুষ এখন অনেক রাজনৈতিক দলের কমিটমেন্টের (প্রতিশ্রুতি)
ওপর আস্থা রাখে না। তারা বলে, আপনারা তো কমিটমেন্ট রক্ষা করেন না। এই যে একটা
ব্যাড কালচার হয়ে গেছে, এটাকে পাল্টানোর দায়িত্ব কাউকে না কাউকে নিতে হবে, সেই
দায়িত্বটা আমরাই নিতে চাই।’
ডা.
শফিকুর রহমান বলেন, ‘আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা জানতে চেয়েছেন—সমাজের বিভিন্ন অংশের
মানুষের প্রতিনিধিত্ব কিভাবে হবে, সব মানুষের সিকিউরিটি কিভাবে নিশ্চিত হবে,
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানটা কিভাবে হবে? যদি আমরা নির্বাচিত হই, তাইলে প্রথমে ১০০
দিনে আমাদের জনগণের প্রতি কী বক্তব্য থাকবে, কী করণীয় থাকবে—এই বিষয়গুলো তারা
আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, আমাদের সবকিছুই ফ্রেম করা আছে, আমরা যখন
যেটা প্রযোজ্য সেটা সামনে রিলিজ (প্রকাশ) করব।’
জামায়াত
আমির বলেন, তারা একটা ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ দেখতে চান। আমরা বলেছি, জনগণের ভালোবাসায়
আমরা নির্বাচিত হলে সেই ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ আমরা গড়ব ইনশাআল্লাহ, আমরা কোনো দলকেই
বাদ দেব না। আগামী পাঁচ বছরে দেশের স্থিতিশীলতা, ইকোনমি ফিরিয়ে আনা, আইনের শাসন
সমাজে কায়েম করা এবং সমাজ থেকে দুর্নীতিকে নির্মূল করার জন্য আমাদের একটি জাতীয়
সরকারের প্রয়োজন। আমরা নির্বাচিত হলে সেই সরকারই গঠন করব।
তিনি
আরও বলেন, আমরা ইলেকশন (নির্বাচন) পেছানোর
কোনো সুযোগ আছে মনে করি না, এবং এটি উচিত নয় মনে করি। আমরা মনে করি, ফেব্রুয়ারির
ঘোষিত এই টাইমলাইনের ভেতরে নির্বাচন হওয়াই দেশের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এর সামান্য
কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দেশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এনএম/ধ্রুবকন্ঠ
.png)
আপনার মতামত লিখুন