ভূয়া মেজর পরিচয় দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন পূর্বক আপত্তিকর ছবির মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইলিং;সিআইডি কর্তৃক মূল আসামী গ্রেফতার
গত ১০/১২/২০২৪ তারিখ সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) এর একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে ব্ল্যাকমেইলিং ও প্রতারণার অভিযোগে সান্টু বিশ্বাস (৩৯), পিতাঃ শ্যামল বিশ্বাস, সাং- সাহাপাড়া, থানা- কেশবপুর, জেলা- যশোরকে গাজীপুর চৌরাস্তা সংলগ্ন অনুপম সুপার মার্কেট থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকালীন সময়ে তার নিকট হতে অপরাধের কাজে ব্যবহৃত ৩টি ফোন উদ্ধার করা হয়।
শামীমা (ছদ্ম নাম) স্বামীর সাথে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন। ২০২১ সালে তার সাথে পরিচয় হয় সান্টু বিশ্বাস (৩৯) নামক এক ব্যক্তির, যে নিজেকে একজন মুসলিম এবং মেজর পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তার পরিচয় দেয়।সান্টু বিশ্বাস তার কথা দিয়ে শামীমার বিশ্বাস অর্জন করে এবং শামীমার সরলতার সুযোগ নিয়ে বিবাহ বন্ধনের মিথ্যা ডকুমেন্টস তৈরী করে তাতে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। এরপর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তারা বিভিন্ন সময় ও স্থানে শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকে। এসময় সান্টু বিশ্বাস গোপনে তাদের ব্যক্তিগত ভিডিও ও ছবি ধারণ করে রাখত। সান্টু সেনা কর্মকর্তা ছাড়াও নিজেকে ঢাকা-যশোর রুটের যশোর ট্রাভেলস নামক পরিবহন ও বিশ্বাস গার্মেন্টসের মালিক হিসেবে পরিচয় দেয় এবং প্রাতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে শামীমার নিকট থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়।
একসময় শামীমা বুঝতে পারেন যে, সান্টু বিশ্বাস আসলে কোনো সেনা কর্মকর্তা নয়, বরং ঘৃণ্য প্রতারক।জালিয়াতি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর, শামীমা সান্টু বিশ্বাসের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেন। তবে, সান্টু বিশ্বাস এখানেই থেমে না থেকে, কিছুদিন পর শামীমার সাথে যোগাযোগ শুরু করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তার অশালীন ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি দেয়। ২০২৪ সালের ৮ মে, সান্টু বিশ্বাস শামীমা ও তার ছেলের মোবাইলে কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে ৫,০০,০০০ টাকা দাবি করে এবং হুমকি দেয় যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা না পাঠানো হয়, তবে এসব ভিডিও ইন্টারনেট-এ ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এই ঘটনার পর শামীমার ছেলে পরিবারের সাথে আলোচনা করে লালবাগ, ডিএমপি থানার মামলা নং- ০৮, তারিখ, ১১/০৬/২০২৪ ইং, ধারা- ৮(১)/৮(২)/৮(৩) পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ তৎসহ ১৭০/৪০৬/৪২০/৪৬৮/৪৯৩ পেনালকোড রুজু করে। মামলাটির তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করার পর অভিযুক্ত সান্টু বিশ্বাসকে গাজিপুর হতে গ্রেফতার করে। প্রথামিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে জড়তি থাকার সত্যতা স্বীকার করেছে।