
নোয়াখালী কলেজের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাহুল দে’কে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন সাগর। এই সময় সাগরের সাথে ডিবি পুলিশের ধস্তাধস্তি হলে সাগরকে ডিবি অফিসে নিয়ে যান ডিবির ওসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন। পরবর্তীতে সাগরকে ছাড়াতে নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মোহাম্মদ নোমান এবং যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান ডিবি অফিসে যান।
বুধবার (৯ এপ্রিল) রাত ১০ টায় নোয়াখালী কলেজ রোডের তালপট্টি এলাকায় নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খানের বাসার সামনে ডিবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাহুল দে’কে গ্রেফতার করতে গেলে সাবেক ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন সাগর পুলিশকে বাঁধা দেন। এক পর্যায়ে ডিবির হাত থেকে রাহুল’কে ছিনিয়ে নেন ছাত্রদল নেতা সাগর। এদিকে রাত ২ টায় সাগরকে মুছলেকা দিয়ে ডিবি অফিস থেকে নিয়ে যান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান।
সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর গা ডাকা দেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা। কিন্তু সাম্প্রতিককালে কিছু ছাত্রদল এবং যুবদল নেতাদের আশ্রয়ে তারা এলাকায় এবং রাস্তাঘাটে উঠতে দেখা গেছে। এই নিয়ে জেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। তাদের অভিযোগ, গত ১৭ বছর নোয়াখালী জেলায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতা-কর্মীদের অত্যাচারে অনেক নিরীহ মানুষ বাড়ি-ঘর ছাড়া হয়েছে। তাদের পুলিশ বা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে চাইলে কিছু ছাত্রদল এবং যুবদল নেতারা বাঁধা দেন।
নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মোহাম্মদ নোমান বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমাদের উপর গত ১৭ বছর কেমন নির্যাতন হয়েছে আমরা জানি। কোন আওয়ামীলীগের সাথে আপোস নয়।
এদিকে অভিযুক্ত নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন। তিনি জানান, আমি মুছলেখা দিয়ে এনেছি যদি চুল পরিমাণ সত্যি হয় তাহলে যে কোনো শাস্তি মেনে নিব। তিনি বলেন, রাতে আমার এলাকার এক ছোট ভাই ফোন করেছে যে নতুন কলেজ রোডের এইখানে পানির ট্যাংকির মোড়ে কয়েক জন বসে চা খাচ্ছে, সেখানে রাহুলও ছিল, ডিবি পুলিশ সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে রাহুল পালিয়ে যায় এইটুকু শুনেছি। আমি আমার পরিচিত ছোট ভাই একটারে বললাম তোরা কেন ওকে ধরিয়ে দিস নি?
এই ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে, নোয়াখালী ডিবির ওসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন’কে একাধিকবার ফোন এবং ওয়াটসএপে খুদে বার্তা দিয়েও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, এই বিষয়ে আমার বিস্তারিত জানা নেই। জেনে জানাবো। পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন এবং মেসেজ পাঠালেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশের কাছ থেকে ছাত্রদল নেতার ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, আমি এই বিষয়ে জানি না।