মায়ানমারের
রাখাইন প্রদেশে দীর্ঘদিনের সংঘাত ও ক্ষমতার পুনর্গঠন আজ নতুন এক নিরাপত্তা বাস্তবতা
তৈরি করেছে। সামরিক জান্তা, স্থানীয় জাতিগত গোষ্ঠী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির দ্বন্দ্বের
মধ্যেই উঠে এসেছে আরাকান আর্মি—এক সশস্ত্র সংগঠন, যারা সামরিক সক্ষমতার পাশাপাশি এখন
মাদক অর্থনীতির মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা সুসংহত করেছে। মায়ানমারের
অভ্যন্তরে এই গোষ্ঠীর দখল শক্তি যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি তাদের কার্যক্রমের ছায়া
বাংলাদেশেও স্পষ্টভাবে পড়ছে। বিশেষত ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ বা আইস বাংলাদেশের সীমান্ত
থেকে শুরু করে সমাজের গভীরে বিস্তার লাভ করছে।
রোহিঙ্গা
সংকটের মতো দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সমস্যাই যেখানে বাংলাদেশের জন্য বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছে,
তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে পরিচালিত মাদকপ্রবাহ।
মানবিক বিপর্যয়, নিরাপত্তা হুমকি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির ত্রিমাত্রিক প্রভাব দেশের জন্য
এক জটিল পরিস্থিতি তৈরি করছে। সীমান্তের অরক্ষিত অংশ, নাফ নদ ও উপকূলীয় রুট এবং পাহাড়ি
জনপদের বিচ্ছিন্ন এলাকা মাদক সিন্ডিকেটগুলোর জন্য একটি সুপরিকল্পিত করিডোরে পরিণত হয়েছে।
আরাকান আর্মির বর্তমান শক্তির উৎস—এই মাদক করিডর—বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য সর্বাধিক
বিপজ্জনক দিক।
রাখাইনে আরাকান
আর্মির উত্থান শুধু সামরিক শক্তির কারণে নয়; বরং তারা একটি বিকল্প প্রশাসনিক কাঠামোও
তৈরি করেছে, যার মধ্যে ট্যাক্সিং, বিচারব্যবস্থা ও স্থানীয় শাসনব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত।
এই শাসন কাঠামোর আর্থিক ভিত্তি হল মাদক ব্যবসা। শান, কাচিন ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলের
সিন্ডিকেটগুলোর সঙ্গে তাদের সহযোগিতা আজ মায়ানমারকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সিন্থেটিক
ড্রাগ উৎপাদনকেন্দ্রে পরিণত করেছে। এই মাদকচক্রের সুবিধাভোগী শুধু আন্তর্জাতিক কার্টেল
নয়; বরং আঞ্চলিক রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তিগুলোও এতে যুক্ত।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ হয়ে উঠছে সহজ লক্ষ্য—একদিকে
ভৌগোলিক নৈকট্য, অন্যদিকে বাজারের চাহিদা ও অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা মাদকপ্রবাহকে বেড়ে
যেতে উৎসাহ দিচ্ছে।
বাংলাদেশের সমাজে ইয়াবা ও আইস-এর আগ্রাসন যে মাত্রায় বিস্তৃত
হয়েছে, তা শুধু আইন-শৃঙ্খলা সংকট নয়; বরং একটি অন্তর্নিহিত সামাজিক বিপর্যয়ের
ইঙ্গিত। দেশের বিপুল যুবসমাজ কর্মসংস্থানহীনতা, হতাশা এবং সামাজিক চাপের ফলে সহজেই
মাদক সিন্ডিকেটের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। এদের অনেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে কেন্দ্রে
করে পরিচালিত পাচার চক্রের বাহক ও মাঠকর্মী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে রোহিঙ্গা
শিবিরের আইনশৃঙ্খলা আরও অবনতি ঘটছে, আর স্থানীয় জনপদের সঙ্গে উত্তেজনাও বাড়ছে।
অপরাধ, সহিংসতা এবং পরিবার ভাঙনের মতো সামাজিক
ক্ষত গভীর হচ্ছে, যা পুনর্গঠনে দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ লাগবে।
অপরদিকে অর্থনীতির উপর এর প্রভাব কম নয়। মাদকের বিপুল অর্থ
মিয়ানমারের কার্টেলে প্রবাহিত হচ্ছে, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থচক্রে বিকৃতি
সৃষ্টি করছে। কালো টাকার অর্থনীতি সম্প্রসারিত হচ্ছে, বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত
হচ্ছে এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—এই অর্থ আবার
সশস্ত্র গোষ্ঠীর সামরিক সক্ষমতায় রূপান্তরিত হয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে আরও
অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। এটি ক্রাইম–টেরর নেক্সাসের এক আদর্শ উদাহরণ। মাদকই হয়ে
উঠছে অস্ত্র, লজিস্টিকস ও রাজনৈতিক টিকে থাকার মূল চালিকা শক্তি।
রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাস্তব পরিস্থিতি এখনো
জটিল। সীমান্তের দুর্গমতা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার অভাব, মিয়ানমারে অস্থিতিশীল
রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত নেটওয়ার্ক এ
সমস্যাকে বহুমাত্রিক করে তুলেছে। সীমান্তে টহল বৃদ্ধি, মাদকবিরোধী অভিযান এবং
কূটনৈতিক প্রচেষ্টা কিছুটা ইতিবাচক হলেও—এএ-এর মতো সংগঠনের পুরো নেটওয়ার্ক ভাঙতে
শুধুমাত্র দেশীয় পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। আঞ্চলিক সহযোগিতা ছাড়া এই চক্র ভাঙার
বাস্তবসম্মত পথ নেই।
বাংলাদেশের সামনে এখন যে প্রশ্নটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—এই প্রবণতা
যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী দশকে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সামাজিক
স্থিতিশীলতা কোথায় দাঁড়াবে? বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্ট করে যে, আরাকান আর্মির মাদক
অর্থনীতি একটি সীমান্ত সমস্যা নয়; বরং এটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা,
জনস্বাস্থ্য, সামাজিক ভারসাম্য ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর বহুমুখী আঘাত করছে।
তাই প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকারের পুনর্মূল্যায়ন, সমন্বিত নিরাপত্তা কৌশল এবং
আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী সহযোগিতা।
মাদক-সন্ত্রাস মোকাবিলা করা এখন শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার
দায়িত্ব নয়; এটি একটি জাতীয় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ। আরাকান আর্মির বিস্তৃত নেটওয়ার্ক
ভাঙতে না পারলে বাংলাদেশ এক দীর্ঘমেয়াদি ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির মুখোমুখি হবে—যেখানে
যুবসমাজ ধ্বংস হবে, সীমান্ত অস্থিতিশীল থাকবে এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামাজিক
ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে। এখনই সময়—সর্বশক্তি দিয়ে এই অন্ধকার অর্থনীতির
বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর।
এমএইছ/ধ্রুবকন্ঠ
.png)
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
মায়ানমারের
রাখাইন প্রদেশে দীর্ঘদিনের সংঘাত ও ক্ষমতার পুনর্গঠন আজ নতুন এক নিরাপত্তা বাস্তবতা
তৈরি করেছে। সামরিক জান্তা, স্থানীয় জাতিগত গোষ্ঠী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির দ্বন্দ্বের
মধ্যেই উঠে এসেছে আরাকান আর্মি—এক সশস্ত্র সংগঠন, যারা সামরিক সক্ষমতার পাশাপাশি এখন
মাদক অর্থনীতির মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা সুসংহত করেছে। মায়ানমারের
অভ্যন্তরে এই গোষ্ঠীর দখল শক্তি যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি তাদের কার্যক্রমের ছায়া
বাংলাদেশেও স্পষ্টভাবে পড়ছে। বিশেষত ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ বা আইস বাংলাদেশের সীমান্ত
থেকে শুরু করে সমাজের গভীরে বিস্তার লাভ করছে।
রোহিঙ্গা
সংকটের মতো দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সমস্যাই যেখানে বাংলাদেশের জন্য বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছে,
তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে পরিচালিত মাদকপ্রবাহ।
মানবিক বিপর্যয়, নিরাপত্তা হুমকি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির ত্রিমাত্রিক প্রভাব দেশের জন্য
এক জটিল পরিস্থিতি তৈরি করছে। সীমান্তের অরক্ষিত অংশ, নাফ নদ ও উপকূলীয় রুট এবং পাহাড়ি
জনপদের বিচ্ছিন্ন এলাকা মাদক সিন্ডিকেটগুলোর জন্য একটি সুপরিকল্পিত করিডোরে পরিণত হয়েছে।
আরাকান আর্মির বর্তমান শক্তির উৎস—এই মাদক করিডর—বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য সর্বাধিক
বিপজ্জনক দিক।
রাখাইনে আরাকান
আর্মির উত্থান শুধু সামরিক শক্তির কারণে নয়; বরং তারা একটি বিকল্প প্রশাসনিক কাঠামোও
তৈরি করেছে, যার মধ্যে ট্যাক্সিং, বিচারব্যবস্থা ও স্থানীয় শাসনব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত।
এই শাসন কাঠামোর আর্থিক ভিত্তি হল মাদক ব্যবসা। শান, কাচিন ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলের
সিন্ডিকেটগুলোর সঙ্গে তাদের সহযোগিতা আজ মায়ানমারকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সিন্থেটিক
ড্রাগ উৎপাদনকেন্দ্রে পরিণত করেছে। এই মাদকচক্রের সুবিধাভোগী শুধু আন্তর্জাতিক কার্টেল
নয়; বরং আঞ্চলিক রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তিগুলোও এতে যুক্ত।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ হয়ে উঠছে সহজ লক্ষ্য—একদিকে
ভৌগোলিক নৈকট্য, অন্যদিকে বাজারের চাহিদা ও অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা মাদকপ্রবাহকে বেড়ে
যেতে উৎসাহ দিচ্ছে।
বাংলাদেশের সমাজে ইয়াবা ও আইস-এর আগ্রাসন যে মাত্রায় বিস্তৃত
হয়েছে, তা শুধু আইন-শৃঙ্খলা সংকট নয়; বরং একটি অন্তর্নিহিত সামাজিক বিপর্যয়ের
ইঙ্গিত। দেশের বিপুল যুবসমাজ কর্মসংস্থানহীনতা, হতাশা এবং সামাজিক চাপের ফলে সহজেই
মাদক সিন্ডিকেটের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। এদের অনেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে কেন্দ্রে
করে পরিচালিত পাচার চক্রের বাহক ও মাঠকর্মী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে রোহিঙ্গা
শিবিরের আইনশৃঙ্খলা আরও অবনতি ঘটছে, আর স্থানীয় জনপদের সঙ্গে উত্তেজনাও বাড়ছে।
অপরাধ, সহিংসতা এবং পরিবার ভাঙনের মতো সামাজিক
ক্ষত গভীর হচ্ছে, যা পুনর্গঠনে দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ লাগবে।
অপরদিকে অর্থনীতির উপর এর প্রভাব কম নয়। মাদকের বিপুল অর্থ
মিয়ানমারের কার্টেলে প্রবাহিত হচ্ছে, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থচক্রে বিকৃতি
সৃষ্টি করছে। কালো টাকার অর্থনীতি সম্প্রসারিত হচ্ছে, বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত
হচ্ছে এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—এই অর্থ আবার
সশস্ত্র গোষ্ঠীর সামরিক সক্ষমতায় রূপান্তরিত হয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে আরও
অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। এটি ক্রাইম–টেরর নেক্সাসের এক আদর্শ উদাহরণ। মাদকই হয়ে
উঠছে অস্ত্র, লজিস্টিকস ও রাজনৈতিক টিকে থাকার মূল চালিকা শক্তি।
রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাস্তব পরিস্থিতি এখনো
জটিল। সীমান্তের দুর্গমতা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার অভাব, মিয়ানমারে অস্থিতিশীল
রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত নেটওয়ার্ক এ
সমস্যাকে বহুমাত্রিক করে তুলেছে। সীমান্তে টহল বৃদ্ধি, মাদকবিরোধী অভিযান এবং
কূটনৈতিক প্রচেষ্টা কিছুটা ইতিবাচক হলেও—এএ-এর মতো সংগঠনের পুরো নেটওয়ার্ক ভাঙতে
শুধুমাত্র দেশীয় পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। আঞ্চলিক সহযোগিতা ছাড়া এই চক্র ভাঙার
বাস্তবসম্মত পথ নেই।
বাংলাদেশের সামনে এখন যে প্রশ্নটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—এই প্রবণতা
যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী দশকে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সামাজিক
স্থিতিশীলতা কোথায় দাঁড়াবে? বর্তমান পরিস্থিতি স্পষ্ট করে যে, আরাকান আর্মির মাদক
অর্থনীতি একটি সীমান্ত সমস্যা নয়; বরং এটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা,
জনস্বাস্থ্য, সামাজিক ভারসাম্য ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর বহুমুখী আঘাত করছে।
তাই প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকারের পুনর্মূল্যায়ন, সমন্বিত নিরাপত্তা কৌশল এবং
আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী সহযোগিতা।
মাদক-সন্ত্রাস মোকাবিলা করা এখন শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার
দায়িত্ব নয়; এটি একটি জাতীয় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ। আরাকান আর্মির বিস্তৃত নেটওয়ার্ক
ভাঙতে না পারলে বাংলাদেশ এক দীর্ঘমেয়াদি ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির মুখোমুখি হবে—যেখানে
যুবসমাজ ধ্বংস হবে, সীমান্ত অস্থিতিশীল থাকবে এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও সামাজিক
ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে। এখনই সময়—সর্বশক্তি দিয়ে এই অন্ধকার অর্থনীতির
বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর।
এমএইছ/ধ্রুবকন্ঠ
.png)
আপনার মতামত লিখুন