ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

শীতে বাড়ছে জয়েন্টের ব্যথা জেনে নিন করণীয়



শীতে বাড়ছে জয়েন্টের ব্যথা জেনে নিন করণীয়
ছবি : সংগৃহীত

দেশজুড়ে পুরোদমে শীত। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে অনেক মানুষ হাতপা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, জয়েন্ট ব্যথা, পেশিতে টান বা শক্তভাবের সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব উপসর্গ শীতের স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া; তবে যাদের আগে থেকেই আর্থ্রাইটিস, গেঁটেবাত বা স্নায়ুর সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যথা আরও তীব্র হতে পারে।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, শীতের সময় শরীর তাপ ধরে রাখতে রক্তনালী সংকুচিত হয়। এতে হাতপা শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। ফলে পেশি শক্ত হয়ে ব্যথা বাড়ে। জয়েন্টের ভেতরে থাকা সিনোভিয়াল ফ্লুইড বা লুব্রিকেন্টও ঠান্ডায় ঘন হয়ে যায়, যা জয়েন্টের নড়াচড়া কমিয়ে দেয়। কারণে হাঁটু, কোমর, আঙুল বা কাঁধে ব্যথা অনুভূত হয়।

শুধু তাই নয়, ঠান্ডায় পেশিতে চাপ বাড়ে এবং স্নায়ুগুলো ব্যথার সিগন্যাল বেশি তীব্রভাবে পাঠায়। তাই আগে থেকেই যাদের আর্থ্রাইটিস বা নিউরোলজিক্যাল সমস্যা আছে, তাদের ব্যথা দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে।

সমাধানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরামর্শ

বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলোশরীর গরম রাখা। মোজা, গ্লাভস, থার্মাল পোশাক মাথা ঢেকে রাখলে রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং ব্যথা কমে। ঘরে নিরাপদ দূরত্বে হিটার ব্যবহার বা গরম পানি দিয়ে হাতপায়ে সেক দেওয়া বেশ কার্যকর।

প্রতিদিন ১০২০ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করাও উপকারী। এতে রক্তপ্রবাহ বাড়ে এবং জয়েন্টের লুব্রিকেন্ট স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি শরীর পর্যাপ্ত পানি না পেলে পেশি শক্ত হয়ে ব্যথা বাড়েতাই শীতেও পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি।

পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসেও চোখ রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। মাছ, ডিম, কলা, বাদাম, ফ্ল্যাক্সসিড রোদে অল্প সময় 

ব্যথা বেশি হলে প্যারাসিটামল বা চিকিৎসকের পরামর্শে ইবুপ্রোফেন ন্যাপ্রক্সেন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেননিজে থেকে অতিরিক্ত ব্যথানাশক খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।

নিম্নোক্ত পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি

> ব্যথা এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে

> জয়েন্ট ফুলে যাওয়া বা লাল হয়ে গেলে

> জ্বরের সঙ্গে ব্যথা হলে

> হাতপা অসাড় বা দুর্বল হয়ে গেলে

> আগে থেকে আর্থ্রাইটিস বা ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের ব্যথা বেড়ে গেলে

গুজব নয়, দরকার বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধান

চিকিৎসকরা মনে করিয়ে দেনশীতে ব্যথা বাড়লেও এটাঠান্ডা লাগার কারণে বাত হয়’— এমন ধারণা বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল। একইভাবে ভেষজ তেল, ঝাড়ফুঁক অথবা অ্যান্টিবায়োটিককোনোটিই এই সমস্যার সমাধান নয়।

যতই বাড়ুক শীত, সঠিক সচেতনতা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে চললে হাতপা জয়েন্টের ব্যথা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

 

 

 

 

 

এমএইছ/ধ্রুবকন্ঠ

বিষয় : লাইফস্টাইল টিপস

আপনার মতামত লিখুন

ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫


শীতে বাড়ছে জয়েন্টের ব্যথা জেনে নিন করণীয়

প্রকাশের তারিখ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

featured Image

দেশজুড়ে পুরোদমে শীত। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে অনেক মানুষ হাতপা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, জয়েন্ট ব্যথা, পেশিতে টান বা শক্তভাবের সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব উপসর্গ শীতের স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া; তবে যাদের আগে থেকেই আর্থ্রাইটিস, গেঁটেবাত বা স্নায়ুর সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে ব্যথা আরও তীব্র হতে পারে।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, শীতের সময় শরীর তাপ ধরে রাখতে রক্তনালী সংকুচিত হয়। এতে হাতপা শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। ফলে পেশি শক্ত হয়ে ব্যথা বাড়ে। জয়েন্টের ভেতরে থাকা সিনোভিয়াল ফ্লুইড বা লুব্রিকেন্টও ঠান্ডায় ঘন হয়ে যায়, যা জয়েন্টের নড়াচড়া কমিয়ে দেয়। কারণে হাঁটু, কোমর, আঙুল বা কাঁধে ব্যথা অনুভূত হয়।

শুধু তাই নয়, ঠান্ডায় পেশিতে চাপ বাড়ে এবং স্নায়ুগুলো ব্যথার সিগন্যাল বেশি তীব্রভাবে পাঠায়। তাই আগে থেকেই যাদের আর্থ্রাইটিস বা নিউরোলজিক্যাল সমস্যা আছে, তাদের ব্যথা দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে।

সমাধানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরামর্শ

বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলোশরীর গরম রাখা। মোজা, গ্লাভস, থার্মাল পোশাক মাথা ঢেকে রাখলে রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে এবং ব্যথা কমে। ঘরে নিরাপদ দূরত্বে হিটার ব্যবহার বা গরম পানি দিয়ে হাতপায়ে সেক দেওয়া বেশ কার্যকর।

প্রতিদিন ১০২০ মিনিট হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করাও উপকারী। এতে রক্তপ্রবাহ বাড়ে এবং জয়েন্টের লুব্রিকেন্ট স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি শরীর পর্যাপ্ত পানি না পেলে পেশি শক্ত হয়ে ব্যথা বাড়েতাই শীতেও পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি।

পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসেও চোখ রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। মাছ, ডিম, কলা, বাদাম, ফ্ল্যাক্সসিড রোদে অল্প সময় 

ব্যথা বেশি হলে প্যারাসিটামল বা চিকিৎসকের পরামর্শে ইবুপ্রোফেন ন্যাপ্রক্সেন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেননিজে থেকে অতিরিক্ত ব্যথানাশক খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।

নিম্নোক্ত পরিস্থিতিতে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি

> ব্যথা এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে

> জয়েন্ট ফুলে যাওয়া বা লাল হয়ে গেলে

> জ্বরের সঙ্গে ব্যথা হলে

> হাতপা অসাড় বা দুর্বল হয়ে গেলে

> আগে থেকে আর্থ্রাইটিস বা ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের ব্যথা বেড়ে গেলে

গুজব নয়, দরকার বিজ্ঞানভিত্তিক সমাধান

চিকিৎসকরা মনে করিয়ে দেনশীতে ব্যথা বাড়লেও এটাঠান্ডা লাগার কারণে বাত হয়’— এমন ধারণা বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল। একইভাবে ভেষজ তেল, ঝাড়ফুঁক অথবা অ্যান্টিবায়োটিককোনোটিই এই সমস্যার সমাধান নয়।

যতই বাড়ুক শীত, সঠিক সচেতনতা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে চললে হাতপা জয়েন্টের ব্যথা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

 

 

 

 

 

এমএইছ/ধ্রুবকন্ঠ


ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

“তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম”

কপিরাইট © ২০২৫ ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত