ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

আটা-ময়দার ডো বানিয়ে ফ্রিজে রাখলে স্বাস্থ্যের যেসব ঝুঁকি বাড়ে



আটা-ময়দার ডো বানিয়ে ফ্রিজে রাখলে স্বাস্থ্যের যেসব ঝুঁকি বাড়ে
ছবি: সংগৃহীত

প্রায় সবার বাড়িতে রুটি বানাতে আটা বা ময়দা মাখা প্রতিদিনের একটি স্বাভাবিক অভ্যাস। তবে অনেকেই ব্যস্ত জীবনে সুবিধার জন্য একবারে বেশি আটা বা ময়দা মেখে রেখে দেন। পরে এক বা দুই দিন ধরে সেই মাখা আটা বা ময়দা ব্যবহার করেন। আর, এতে আপত্তি জানায় পুষ্টিবিদরা।

পুষ্টিবিদরা সতর্ক করে জানায়, কাজটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহ-সহ একাধিক পুষ্টি বিশেষজ্ঞের মতে, ফ্রিজে রাখা ময়দা বা দীর্ঘ সময় ধরে ফেলে রাখা আটা শরীরের হজম ক্ষমতা ও অন্ত্রের ওপর কুপ্রভাব ফেলতে পারে। এই জমিয়ে রাখা আটা বা ময়দাই শরীরের নানা রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। শ্বেতা শাহ জানিয়েছেন, ময়দা দীর্ঘ সময় পানির সঙ্গে মিশে থাকলে গ্লুটেনের বিক্রিয়া বাড়তে পারে। গ্লুটেন মূলত গমের ভেতরের একটি প্রোটিন, যা পানির সংস্পর্শে এসে ইলাস্টিক বা টানটান ভাব তৈরি করে। সাধারণভাবে এটি রুটিকে নরম করে, হালকা ফোলা অনুভূতি দেয় এবং আটা মাখতে সাহায্য করে।

কিন্তু যখন আটা ১০–৪৮ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখা হয় বা সারা দিন ঘরে রেখে দেওয়া হয়, তখন গ্লুটেন অত্যধিক বেশি হয়ে রুটি শক্ত, রাবারের মত হয়ে যায়।

আবার, তা চিবানোও কঠিন হয়ে যায়। এই অতিরিক্ত গ্লুটেন অনেকের পেটেও অস্বস্তি তৈরি করে এবং রুটি হজম করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই পুষ্টিবিদরা মনে করেন, তাজা আটা সবসময়ই কম গ্লুটেন নিঃসরণ করে। এটা শরীরের জন্য সহজপাচ্য।

 

ডায়েটিশিয়ান ডা. আমরিন শেখ বলেন, ময়দা বেশি সময় ধরে পড়ে থাকলে তার গঠন ও গুণগত মানে পরিবর্তন আসে। ময়দা অনেকক্ষণ ধরে পানিতে ভেজা থাকলে গ্লুটেন শিথিল হয়ে আবার শক্তভাবে প্রসারিত হয়, যা অন্ত্রের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চাপ সৃষ্টি করে।

এটি পেট ফাঁপা, অস্বস্তি, গ্যাস বা এসিডিটির সমস্যা তৈরি করতে পারে। এমনকি যারা প্রায়শই বলেন যে আটা তাদের শরীরে সহ্য হয় না, তাদের সেই সহ্য না হওয়ার আসল কারণ পরে দেখা যাচ্ছে যে মেখে রাখা বাসি আটা বা ময়দাই দায়ী।

শুধু হজমে সমস্যা তৈরি করাই নয়। বাসি আটা ও ময়দার জন্য পুষ্টিতেও পার্থক্য তৈরি হয়ে যায়। তাজা গম বা ময়দায় প্রাকৃতিক তেল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ বেশি থাকে। বিশেষ করে ভিটামিন বি ও ফাইবার তাজা ময়দায় বেশি থাকে। কিন্তু বেশি দিন মেখে রাখা আটায় তেল ও পুষ্টিগুণ কমতে থাকে। শুধু তাই নয়, মেখে রাখা আটার স্বাদেও পরিবর্তন আসে এবং গন্ধে এক ধরনের বাসি ভাব থাকে। 

সেসব কথা মাথায় রেখেই পুষ্টিবিদরা জানায়, পানি দিয়ে মাখা ময়দা কখনো ফ্রিজে দীর্ঘদিন রাখা উচিত নয়। কেউ যদি সময় বাঁচাতে আগেভাগে ময়দা মেখে রাখেন, তবে সামান্য তেল মিশিয়ে আটা মেখে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা ব্যবহার করাই ভালো। এতে গ্লুটেনের অতিরিক্ত বৃদ্ধি আটকানো সম্ভব হয়।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এমএম/ধ্রুবকন্ঠ

বিষয় : জীবন যাপন আটা-ময়দা আটা-ময়দার ডো ফ্রিজে রাখলে স্বাস্থ্যের যেসব ঝুঁকি বাড়ে

আপনার মতামত লিখুন

ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫


আটা-ময়দার ডো বানিয়ে ফ্রিজে রাখলে স্বাস্থ্যের যেসব ঝুঁকি বাড়ে

প্রকাশের তারিখ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

প্রায় সবার বাড়িতে রুটি বানাতে আটা বা ময়দা মাখা প্রতিদিনের একটি স্বাভাবিক অভ্যাস। তবে অনেকেই ব্যস্ত জীবনে সুবিধার জন্য একবারে বেশি আটা বা ময়দা মেখে রেখে দেন। পরে এক বা দুই দিন ধরে সেই মাখা আটা বা ময়দা ব্যবহার করেন। আর, এতে আপত্তি জানায় পুষ্টিবিদরা।

পুষ্টিবিদরা সতর্ক করে জানায়, কাজটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহ-সহ একাধিক পুষ্টি বিশেষজ্ঞের মতে, ফ্রিজে রাখা ময়দা বা দীর্ঘ সময় ধরে ফেলে রাখা আটা শরীরের হজম ক্ষমতা ও অন্ত্রের ওপর কুপ্রভাব ফেলতে পারে। এই জমিয়ে রাখা আটা বা ময়দাই শরীরের নানা রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী। শ্বেতা শাহ জানিয়েছেন, ময়দা দীর্ঘ সময় পানির সঙ্গে মিশে থাকলে গ্লুটেনের বিক্রিয়া বাড়তে পারে। গ্লুটেন মূলত গমের ভেতরের একটি প্রোটিন, যা পানির সংস্পর্শে এসে ইলাস্টিক বা টানটান ভাব তৈরি করে। সাধারণভাবে এটি রুটিকে নরম করে, হালকা ফোলা অনুভূতি দেয় এবং আটা মাখতে সাহায্য করে।

কিন্তু যখন আটা ১০–৪৮ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখা হয় বা সারা দিন ঘরে রেখে দেওয়া হয়, তখন গ্লুটেন অত্যধিক বেশি হয়ে রুটি শক্ত, রাবারের মত হয়ে যায়।

আবার, তা চিবানোও কঠিন হয়ে যায়। এই অতিরিক্ত গ্লুটেন অনেকের পেটেও অস্বস্তি তৈরি করে এবং রুটি হজম করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই পুষ্টিবিদরা মনে করেন, তাজা আটা সবসময়ই কম গ্লুটেন নিঃসরণ করে। এটা শরীরের জন্য সহজপাচ্য।

 

ডায়েটিশিয়ান ডা. আমরিন শেখ বলেন, ময়দা বেশি সময় ধরে পড়ে থাকলে তার গঠন ও গুণগত মানে পরিবর্তন আসে। ময়দা অনেকক্ষণ ধরে পানিতে ভেজা থাকলে গ্লুটেন শিথিল হয়ে আবার শক্তভাবে প্রসারিত হয়, যা অন্ত্রের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চাপ সৃষ্টি করে।

এটি পেট ফাঁপা, অস্বস্তি, গ্যাস বা এসিডিটির সমস্যা তৈরি করতে পারে। এমনকি যারা প্রায়শই বলেন যে আটা তাদের শরীরে সহ্য হয় না, তাদের সেই সহ্য না হওয়ার আসল কারণ পরে দেখা যাচ্ছে যে মেখে রাখা বাসি আটা বা ময়দাই দায়ী।

শুধু হজমে সমস্যা তৈরি করাই নয়। বাসি আটা ও ময়দার জন্য পুষ্টিতেও পার্থক্য তৈরি হয়ে যায়। তাজা গম বা ময়দায় প্রাকৃতিক তেল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ বেশি থাকে। বিশেষ করে ভিটামিন বি ও ফাইবার তাজা ময়দায় বেশি থাকে। কিন্তু বেশি দিন মেখে রাখা আটায় তেল ও পুষ্টিগুণ কমতে থাকে। শুধু তাই নয়, মেখে রাখা আটার স্বাদেও পরিবর্তন আসে এবং গন্ধে এক ধরনের বাসি ভাব থাকে। 

সেসব কথা মাথায় রেখেই পুষ্টিবিদরা জানায়, পানি দিয়ে মাখা ময়দা কখনো ফ্রিজে দীর্ঘদিন রাখা উচিত নয়। কেউ যদি সময় বাঁচাতে আগেভাগে ময়দা মেখে রাখেন, তবে সামান্য তেল মিশিয়ে আটা মেখে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা ব্যবহার করাই ভালো। এতে গ্লুটেনের অতিরিক্ত বৃদ্ধি আটকানো সম্ভব হয়।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এমএম/ধ্রুবকন্ঠ


ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho

“তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম”

কপিরাইট © ২০২৫ ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত