তসলিমা নাসরিনের বই রাখায় বইমেলায়সব্যসাচী প্রকাশনার স্টলে হামলা

নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিনের একটি বই বিক্রি করায় অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশনা সংস্থা সব্যসাচীর স্টলে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ সময় প্রকাশনা সংস্থাটির অন্যতম স্বত্বাধিকারী ও লেখক শতাব্দী ভব হামলাকারীদের রোষানলে পড়েন। এ ঘটনার পর সব্যসাচীর স্টল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরে পুলিশ তাঁকে বইমেলা থেকে নিয়ে যায়।
জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বেনারকে বলেন, “বইমেলায় কিছু ঝামেলা হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন।”
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে ১২৮ নম্বর স্টলে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে তসলিমা নাসরিনের ‘চুম্বন’ বইটি বিক্রি হচ্ছিল।
বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি শান্ত হলে স্টলটি খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে স্টলটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে টাস্কফোর্সের সভার পর।
সব্যসাচীর আরেক কর্ণধার অভিনয়শিল্পী সানজানা মেহেরান তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, তাদের স্টলটিতে হামলা চালানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি করতে দেখে সব্যসাচীর স্টলে ভিড় করেন একদল লোক। লেখক শতাব্দী ভবন সেখানে বসেছিলেন। তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি করা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে শতাব্দী হাতজোড় করে ক্ষমা চান এবং পুলিশ তাকে নিয়ে যায়।
বইমেলা টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ড. সেলিম রেজা বলেন, দুঃখজনক একটি ঘটনা ঘটেছে। সব্যসাচী স্টলটি কিছুক্ষণ বন্ধ রাখার পর খুলে দেওয়া হয়েছে।
তসলিমা নাসরিনের বই নিষিদ্ধ ও সব্যসাচী স্টল বন্ধ করা নিয়ে অনলাইনে ‘তৌহিদি জনতা’ গতকাল সোমবার থেকেই সক্রিয় ছিল।
মুসান্না আল ফাইয়াজ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে সোমবার এক পোস্টে বলা হয়, “….ওদের সাহস কী পরিমাণ বেড়েছে, ভাবা যায়? তাসলিমা নাসরিনের বই প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বইমেলায়, এসব নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।”
তসলিমা নাসরিনের ‘চুম্বন‘ শিরোনামের বইটি মূলত গল্পগ্রন্থ। তার উপন্যাস ‘লজ্জা’ এবং আরও কয়েকটি বই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। একপর্যায়ে তাকে দেশের বাইরে নির্বাসনে যেতে হয়।