গ্রাফিতি মুছে দেয়ার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিবৃতি দিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট
স্বৈরাচার বিরোধী ঘৃণাস্তম্ভ মুছে দেয়া স্বৈরাচারকে পুনর্বাসিত করারই চক্রান্ত
স্বৈরাচার বিরোধী ঘৃণস্তম্ভ মুছার দায়ে প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে এবং প্রশাসনকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষককেন্দ্র (টিএসসি)-সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে থাকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতিটি (‘ঘৃণাস্তম্ভ’) গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে প্রক্টরের নির্দেশে মুছে ফেলা হয়। গোয়েন্দা সংস্থা (NSI) এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গ্রাফিতিটি মুছে দেওয়া হয়েছে বলে প্রক্টর জানিয়েছেন। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিবৃতি দিয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দ। এতে স্বাক্ষর করেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সংগঠক নাঈম উদ্দিন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক টিভান হিলারী।
নেতৃবৃন্দ বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেট্রোরেলের পিলারে ফ্যাসিস্ট হাসিনার গ্রাফিতি যা জুলাই অভ্যুত্থানের ঘৃণাস্তম্ভে পরিণত হয়েছিলো গতকাল তা সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা NSI এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদের যোগসাজশে মুছে ফেলা হয়। গণঅভ্যুত্থানের পরে বিশ্ববিদ্যালয়কে গণতান্ত্রিক করে তোলার স্বপ্ন নিয়েই ঢাবির ভিসি, প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ইত্যাদি পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নৃশংস চেহারা মুছে দেওয়ার মাধ্যমে, আওয়ামিলীগের অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত।”
তারা আরও বলেন, “আওয়ামীলীগ আমলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আওয়ামীলীগ সরকারের আঙ্গুলি হেলনে কার্যক্রম পরিচালনা করতো, এখনও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘উপরের নির্দেশে’ কাজ করছে। গোয়েন্দা সংস্থা এবং সরকারের প্রেসক্রিপশনে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় চালালে তা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের উপর চরম আক্রমণ, যা গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।“
নেতৃবৃন্দ বলেন, “এমন গর্হিত কাজ করার পরেও এই ধরনের একজন ব্যক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালন করার সকল ধরনের নৈতিক অধিকার হারয়েছেন। অবলিম্বে প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে। স্বৈরাচার বিরোধী ঘৃণাস্তম্ভ শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, সমগ্র জাতির সম্পত্তি। এই ঘৃণ্য কাজের দায় স্বীকার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।”
নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “স্বৈরাচারের পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”