গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন
আজ ২৯ ডিসেম্বর, রবিবার, ২০২৪, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের “মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ” হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির উদ্যোগে ‘চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন: পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ত্ব করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ, ড. সামিনা লুৎফা নিত্রা, আইনজীবী মানজুর আল মতিন। উপস্থিত ছিলেন সীমা দত্ত, সত্যজিৎ বিশ্বাস, রাফিকুজ্জামাস ফরিদ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
গত ২৫ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ‘সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’- এর মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২৬ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। সেইদিন আদালত প্রাঙ্গনে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং চট্টগ্রাম বারের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুন হন। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির একটি ‘প্রতিনিধি দল’ চট্টগ্রামের পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে করণীয় নির্দেশ করার জন্য চট্টগ্রাম সফর করেন। ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ, আব্দুল্লাহ্ আল কাফি রতন, সীমা দত্ত, সত্যজিৎ বিশ্বাস ও রাফিকুজ্জামান ফরিদ। চট্টগ্রাম থেকে যুক্ত হন আইনজীবী জনাব জহির উদ্দিন ও আইনজীবী জনাব শফিউদ্দিন কবির আবিদ। প্রতিনিধি দলটি ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে সরকারের কাছে ৫টি প্রস্তাব রাখেন। তা হলো
১. আইনজীবী আলিফ হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষীদের ফায়দা লুটতে দেয়া চলবে না।
২. কোর্ট প্রাঙ্গনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও ভাঙচুরের ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে হবে। এই ঘটনায় উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করতে হবে। একইসাথে ঘটনার সময়ে সেবক পল্লীতে ও পাশের আরেকটি হিন্দু পল্লীতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যারা এই পরিস্থিতিকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দিকে নিয়ে যেতে চাইছিলো তাদের দ্রুত চিহ্নিত করা প্রয়োজন। কারণ ভবিষ্যতেও তারা একই ধরণের অপরাধমূলক তৎপরতা চালাতে পারে।
৩. অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির হরিজনদের হয়রানি ও সেখানে যে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে সেটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
৪. যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত করতে হবে। ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজগুলো পরীক্ষা করতে হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। গণগ্রেফতার ও গ্রেফতারবাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।
৫. চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সকল অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তির বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের আইনজীবীরা যাতে আদালতে জামিনের আবেদনসহ সকল ধরণের আইনি পদক্ষেপ নির্বিঘ্নে নিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আত্মপক্ষ সমর্থন করা ও বিচার পাওয়ার অধিকার সকল মানুষের আছে। এটা লঙ্ঘিত হলে একদিকে যেমন ব্যক্তির আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন হবে, অপরদিকে বহির্বিশ্বের কাছে অভ্যুত্থানের নামে যে মিথ্যে প্রচার চালানো হচ্ছে, সেটাই শক্তিশালী হবে। আমরা এর অবসান চাই।