জাতীয়

প্রখ্যাত গণসঙ্গীত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের গভীর শোক প্রকাশ

আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বাংলার প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী, গীতিকার, সুরকার প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী এবং সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন,
“ প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় সারা জীবন ধরে অসংখ্য কালজয়ী গান সৃষ্টি করেছেন এবং গেয়েছেন । তাঁর সৃষ্টি সমাজ প্রগতির লড়াইয়ে আমাদের অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস । তিনি গানে গানে আমাদেরকে ‘লাল টুকটুকে স্বপ্ন’ কে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে শিখিয়েছেন; শিখিয়েছেন ‘চোখের মণি’ না বেঁচে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে। ২০১৬ সালে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৪র্থ কেন্দ্রীয় সম্মেলনে আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন। তাঁর গান শুরু হতেই বৃষ্টিও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু বৃষ্টির বাধা উপেক্ষা করে, বৃষ্টির মধ্যেই তিনি গান পরিবেশন করেন। বৃষ্টি বাড়লে, ছাতা মাথায় নিয়ে গান গেয়ে শোনান। গানের সুর, ভাষা, গায়কী দিয়ে দর্শক শ্রোতাদের হৃদয়ে সংগ্রামের প্রেরণা সঞ্চার করে যান। তাঁর এ পরিবেশনা আমাদের স্মৃতিতে আজও মলিন।
তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সঙ্গীতের অপূরনীয় ক্ষতি হলো। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মীদের জন্যেও– এ এক বড় ক্ষতি।”

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “তাঁর ‘আমি বাংলায় গান গাই’ ছাড়াও ‘আলু বেচো’, ‘ছোকরা চাঁদ’, ‘তোমার কি কোনও তুলনা হয়’, ‘সেই মেয়েটি’, ‘ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ’–এর মতো গান আমাদের হৃদয়কে আপ্লুত করেছে বারবার। এসব গান বৈষমমূলক সমাজকে চিনতে শিখিয়েছে এবং সমাজ বদলের লড়াইয়ে সাহস যুগিয়েছে, উদ্বুদ্ধ করেছে। অল্প বয়স থেকেই কবিতায় সুর দিতেন প্রতুল। বাংলা আধুনিক গান থেকে জাপানি গান, আবার হিন্দি ছবির গান থেকেও উপাদান সংগ্রহ করেছেন। সৃষ্টি করেছেন একের পর এক গান। তিনি নিজেও গান লিখতেন। অথচ প্রথাগত কোনও সঙ্গীতশিক্ষা তিনি নেননি। নিজের হৃদয় নিঃসৃত আবেগকেই সুর ও কথার মেলবন্ধনে বেধে ফেলতে শিখেছিলেন। মানুষের মুখে মুখে ফেরে তাঁর গানের কথা। তিনি গানে গানে ‘ঘরের খেয়ে বনের ধারে মোষ তাড়ানো উল্টো স্বভাব’– এর কথা বলতেন, লড়াইয়ের কথা বলতেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা বলতেন, মানুষ হয়ে বাঁচার কথা বলতেন। তিনি আমাদের সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামের সাথী। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি বেঁচে থাকবেন তাঁর মহান সৃষ্টির মাঝে– এই আমাদের প্রত্যাশা।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button