ইতালির উত্তরাঞ্চলে পরিচয়পত্র নবায়ন করতে আসা এক ‘বয়স্ক নারী’র ঘাড়, হাত ও চিবুকে গাঢ় কালো লোম দেখে কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। এর সূত্র ধরে উন্মোচিত হয় একটি অপরাধ, গ্রেপ্তার করা হয় ৫৭ বছর বয়সী এক পুরুষকে।

মান্তুয়ার পুলিশ প্রিসিঙ্কটের এক মুখপাত্র মঙ্গলবার সিএনএনকে জানান, ওই ব্যক্তি হচ্ছেন ২০২২ সালে ৮২ বছর বয়সে বোরগো ভিরজিলিও শহরে মারা যাওয়া গ্রাতসিয়েলা দাল’ওলিওর ছেলে।

পুলিশ বলেছে, সাবেক এই নার্স, যিনি বর্তমানে বেকার, নিজের মায়ের মৃত্যু কর্তৃপক্ষকে জানাননি। মায়ের পরিচয়পত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ছেলে মেকআপ, পরচুলা ও তার মায়ের পোশাক মায়ের ছদ্মবেশে পরিচয়পত্র নবায়নের জন্য হাজির হন।

কিন্তু আবেদন প্রক্রিয়ায় থাকা কর্মকর্তা অসঙ্গতি টের পেয়ে কর্তৃপক্ষকে জানান এবং তারা ‘মিসেস দাল’ওলিও’কে আবার পৌরসভা কার্যালয়ে ডেকে পাঠান।

পার্কিং লটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ব্যক্তি মায়ের ছদ্মবেশেই কার্যালয়ে আসেন—যদিও তার মায়ের কখনো ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। মুখপাত্র বলেন, পুলিশ সেখানেই তাকে ধরে।

পরে পুলিশ ওই নারীর ঠিকানায় গেলে লন্ড্রি রুমের আলমারিতে তার মমি-কৃত মৃতদেহ পায়—যা স্লিপিং ব্যাগে মোড়ানো ছিল।

পুলিশ জানান, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লাশ গোপন করা, রাষ্ট্রকে প্রতারণা, ছদ্মবেশ ধারণ এবং সরকারি নথি জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, পঁচন ঠেকাতে তিনি সিরিঞ্জ দিয়ে মায়ের দেহ থেকে তরল পদার্থ বের করে ফেলেছিলেন। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মুখপাত্র বলেন, ময়নাতদন্তের ফলাফলের অপেক্ষায় তিনি স্থানীয় কারাগারেই রয়েছেন।

ইতালিতে পেনশন জালিয়াতি একটি প্রচলিত ঘটনা। দেশটির আর্থিক অপরাধ–দমনকারী পুলিশ বাহিনী গার্দিয়া দি ফিনানসার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিবছর ডজনের বেশি মানুষ মারা যাওয়া ব্যক্তির ছদ্মবেশ ধারণ করে তাদের পেনশন তুলতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়।

দেশটির মৃত্যু নিবন্ধন ব্যবস্থা ও বিভিন্ন সরকারি সেবা অনেক সময় সমন্বিত না থাকায় কোনো মৃত্যু রিপোর্ট হতে বহু বছর লেগে যায়—ফলে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে কেউ জানান না দেওয়া পর্যন্ত মৃত ব্যক্তিদের পেনশন চেক পাঠিয়ে যাওয়া হয়।

সূত্র : সিএনএন

এনএম/ধ্রুবকন্ঠ