৬ দফা দাবি আদায়ে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ,উপাচার্যের বাসভবনে তালা

উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ, শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারসহ ছয় দফা দাবিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কুয়েট ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মিছিল বিভিন্ন চত্ত্বর ঘুরে শহীদ মিনারে গিয়ে সেটি সমাবেশে রূপ নেয়।
সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
কুয়েটের সিভিল ডিপার্টমেন্টের ২০তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেনারনিউজকে বলেন, “হামলাকারীরা খুলনা শহরের বিভিন্ন মেসে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে হুমকি দিচ্ছে।”
”হামলার চার দিন পার হয়ে যাওয়ার পর প্রশাসন হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে কোন ব্যবস্থা নেইনি। উল্টো সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।এ জন্য সাধারণ ছাত্ররা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর ছয় দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। এই ভবনে থাকার আর কোনো অধিকার নেই তার।”
ছাত্রদের দাবিগুলো হল- উপাচার্য, উপ-উপচার্যের পদত্যাগ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় জড়িত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের ও তাদের আজীবন বহিষ্কার ও শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে।
এছাড়াও দাবির মধ্যে রয়েছে- সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নিশ্চিত করা, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় কুয়েট কর্তৃপক্ষকে বহন করা, স্থানীয় বিএনপি কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে, কুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরকম বিবৃতি প্রদান করা, ও উপরুক্ত সকল দাবি পূরণ করে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপাচার্য, উপ-উপচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে পদত্যাগ করা।
এ বিষয়ে উপাচার্য ড. মুহাম্মদ মাছুদ বেনারনিউজকে বলেন, আমরা পাঁচটি দাবি মেনে নিয়েছি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। পুলিশ সকল সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছে। আহতদের চিকিৎসা ব্যয়ও আমরা বহন করছি। এরপরও কেন আমার পদত্যাগ দাবি করছে সেটা আমি বুঝতে পারছি না,” বলেন তিনি।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নতুন কর্মী সংগ্রহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ৫০ জনের মত শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।