বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান: জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান: জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। সেমিনার ও আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান–এর ভাগিনা জনাব টিপু সুলতান। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান–এর ভাতিজা জনাব মাহফুজুর রহমান মিরন। সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জনাব নাফরিজা শ্যামা। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের জনশিক্ষা বিভাগের কীপার জনাব আসমা ফেরদৌসি।
আলোচনায় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের জীবনের নানা ঘটনার স্মৃতিচারণ করা হয়। হামিদুর রহমান ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৫৩ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। মাত্র ১৮ বছর বয়সে শহীদ হওয়া হামিদুর রহমান ছিলেন সাত জন বীরশ্রেষ্ঠ পদকপ্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে লেফটেন্যান্ট আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী এবং লেফটেন্যান্ট নুরের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর একটি দল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়। সিপাহী হামিদুর রহমানের দায়িত্ব ছিল গ্রেনেড ছোড়ার। দুটি গ্রেনেড সফলভাবে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর মেশিনগান পোস্টে আঘাত হানে। কিন্তু এরপরই হামিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। সেদিন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে সীমানা ফাঁড়িটি দখল করতে সক্ষম হলেও শহীদ হন হামিদুর রহমান। পরবর্তীতে সহযোদ্ধারা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ভারতের চব্বিশ পরগনার আম্বাসার হাতিমারাছড়া গ্রামে দাফন করে। দীর্ঘ ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর তাঁর দেহাবশেষ বাংলাদেশে এনে রাষ্ট্রীয় সম্মানে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনঃসমাহিত করা হয়।