সেনা হেফাজতে বিচার বহির্ভূতভাবে যুবদল নেতা হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের বিক্ষোভ মিছিল

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা মো. তৌহিদুল ইসলাম এর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট৷ আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর টিএসসি হতে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে মিলিত হয়৷ জোট সমন্বয়ক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এর সভাপতিত্বে ও সহ-সমন্বয়ক জাবির আহমদ জুবেল এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জোট নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে তৌহিদুল ইসলাম সহ সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার বিচার দাবি করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর সভাপতি মিতু সরকার বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান শেষ হলেও গুম-খুনের রাজত্ব শেষ হয়নি। নিরাপত্তার নামে সেনাবাহিনীকে মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার মধ্য দিয়ে জনগণকে আরো বেশি অনিরাপদ করা হচ্ছে।”
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর সভাপতি অঙ্কন চাকমা বলেন, “সেনা কর্তৃক নাগরিক হত্যার ঘটনা এদেশে বহু পুরাতন। পাহাড়ে সেনা শাসনের মধ্য দিয়ে নিপীড়নের অনুশীলন হয়।”
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ হায়দার চঞ্চল বলেন, “সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ। মাজার ভাঙ্গা থেকে শুরু করে নারী ফুটবলারদের উপর আক্রমণ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বাস্তব চিত্র। যৌথ বাহিনী এই আরাজকতা না থামিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে৷”

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমদ জুবেল বলেন, “অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে যৌথ বাহিনী শ্রমিক হত্যার মধ্য দিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করে৷ এর ধারাবাহিকতায় তৌহিদুল ইসলামের হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই সরকার গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে এপর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ১৪ জন নাগরিককে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা সংঘটিত করে গণঅভ্যুত্থানের সাথে প্রতারণা করেছে।”
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এর সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়েও সেনাবাহিনীর বিতর্কিত ভূমিকা আমরা ভুলিনি৷ যারা সেনা মদদে ক্ষমতায় এসেছে তারা জনগণের সাথে বেঈমানী করেছে৷ এর ফলাফল হিসাবে একের পর এক বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে৷ কিন্তু এদেশে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বারবার বিদ্রোহ হয়েছে৷ আজও জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে৷”
সমাবেশের সভাপতি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, “জনগণ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে অভ্যুত্থান ঘটিয়েছিলো৷ পুলিশী রাষ্ট্র গঠন করা অভ্যুত্থানের চেতনা বিরোধী। অথচ আমরা দেখছি বর্তমান সরকারের আড়ালেও যারা সরকার পরিচালনা করছে তাদের দ্বারা এই বিচার বহির্ভূত, হত্যাকাণ্ড, গুম, খুনের সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।”
সমাবেশে অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডে সুষ্ঠু বিচার, সেনাবাহিনীর মেজিস্ট্রেসী ক্ষমতা প্রত্যাহার ও সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানানো হয়৷