জাতীয়

জাতীয় নাগরিক কমিটির তাৎক্ষণিক মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

যুগ্ম-মুখ্য সংগঠক মোঃ আতাউল্লাহ এবং নাগরিক কমিটির অন্যান্য নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত।

আজ সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে বাতি নিভিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মুখ্য সংগঠক মোঃ আতাউল্লাহ এবং অন্যান্য নেতাকর্মীদের ওপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক মিছিল বের করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। রাজধানীর বাংলামোটরস্থ রূপায়ন টাওয়ার কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি শুরু হয় এবং শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং সংহতি বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল।

সমাবেশে সারজিস আলম বলেন- “খুনি ও ফ্যাসিবাদি শেখ হাসিনার দোসররা এখনও নানাভাবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিদের ওপর হামলা করছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে নির্বিকার ভূমিকা দেখা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জিজ্ঞেস করতে চাই- কীভাবে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আদালতের মতো একটি পবিত্র প্রাঙ্গনে একটি রুমে ঢুকিয়ে আমার ভাইয়ের উপর এমন নির্মম হামলা হলো? আপনারা যদি এই হামলার ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হন, তবে আপনাদের মুখে লেগে থাকা চুনকালি আর মুছতে পারবেন না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আপনাদের গণবিরোধী এবং গণবিধ্বংসী অবস্থান জনতার মনে গভীর আস্থার সংকট তৈরি করেছে। জনতাকে আশ্বস্ত করতে চাইলে, এই ঘটনায় জড়িতদের অতিদ্রুত গ্রেফতার করুন।”

আখতার হোসেন বলেন- “আপনারা দেখেছেন খুলনা রেলস্টেশনের ডিসপ্লেতে ভেসে উঠেছে ‘ছাত্রলীগ ভয়ংকর রূপে ফিরে আসবে’। গতকাল আমাদের উপর দীর্ঘদিন নিষ্পেষণকারী, গণহত্যাকারী ও জঙ্গি সংগঠন ছাত্রলীগ শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে প্রকাশ্যে এসে ফুল দিয়ে গেছে। গত কয়েকদিনে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের দুইজন সহযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমাদের আতাউল্লাহ ভাইয়ের উপর হামলা হয়েছে। এভাবে পতিত ফ্যাসিবাদি বাকশালীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এবং দেশ ও জনতাবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা করছে। এদের প্রত্যেকটি কর্মকাণ্ডের দায়ভার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিতে হবে।”

সংহতি বক্তব্যে আরিফ সোহেল বলেন- “আগস্টের পর পরাজিত ফ্যাসিবাদি ও গণহত্যাকারী শক্তি বারবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদের অনেক সহযোদ্ধা আগস্টের পরও এখনও হামলার শিকার হচ্ছে, হাসপাতালের বেডে কাঁতরাচ্ছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই পরাজিত ফ্যাসিবাদি শক্তির দোসরদেরকে আইনের আওতায় আনতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আপনারা যদি এভাবে পরাজিত ফ্যাসিবাদি শক্তিকে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হন, তাদেরকে বিচারের সম্মুখীন করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ছাত্র-জনতার কাছে আসুন। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই গণহত্যাকারীদের প্রতিহত করবো।”

সমাপনী বক্তব্যে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন- “আজকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমাদের সহযোদ্ধাদেরকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির ওপর হামলার অর্থ অভ্যুত্থানের শক্তির ওপর হামলা। এই হামলার সাথে জড়িত ফ্যাসিবাদের দোসর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান বাবুলকে অনতিবিলম্বে আইনজীবী সমিতি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। বাবুলসহ যারা এই হামলার সাথে জড়িত এদের প্রত্যেকের আইনজীবী সনদ বাতিল এবং প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে। গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী বাকশালীদের দ্বারা সংঘঠিত প্রত্যেকটি হামলা-গুম-খুনের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। খুনি হাসিনাসহ পরাজিত ফ্যাসিবাদিদের সকলকে দেশে ফিরিয়ে এনে অনতিবিলম্বে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button