১৪ সালের বিনা ভোটের নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট ডিসিদের বিচারের আওতায় আনবে সরকার
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) বিচারের আওতায় আনবে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যেসব জেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন হয়েছে, সেইসব জেলার রিটার্নিং অফিসার বা জেলা প্রশাসকদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। বিশেষ করে ১৫৩ আসনে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব জেলা প্রশাসককে খুব শিগগির আইনের আওতায় আনা হবে।২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপির বর্জন সত্ত্বেও অনুষ্ঠিত হয়। ‘একতরফা’ এ নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর জোটভুক্ত দলগুলোসহ মাত্র ১২টি দল অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোট ও তাদের শরিক দলের প্রার্থীরা ভোটের আগেই ৩০০ আসনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। অপরদিকে ১৪৭ আসনে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতায় প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৯০ জন।ভোটারবিহীন ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একাই ২৩৪টি আসন পায়। জাতীয় পার্টি ৩৪টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৬টি, জাসদ (ইনু) ৫টি, তরীকত ফেডারেশন ২টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ২টি, বিএনএফ ১টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৬টি আসনে জয়লাভ করেন। এ নির্বাচনে (১৪৭টি আসনে) ভোট প্রদানের হার দেখানো হয় ৪০.০৪ ভাগ।দশম সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন সহিংসতার ঘটনায় নিহত হন ১৯ জন। নির্বাচনপূর্ব সহিংসতার দিক থেকে এ নির্বাচন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের আগের দিন পর্যন্ত নিহত হন ১২৩ জন।নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৃতীয় দফা সরকার গঠিত হয়। এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিকে সংসদে ‘বিরোধী দল’ বানানো হয়। একই সঙ্গে দলটি থেকে মন্ত্রীও করা হয় এবং এরশাদকে বানানো হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত। জাতীয় পার্টি আসলে সরকারের অংশ নাকি বিরোধী দল, তা নিয়ে সেই সময় প্রশ্ন ওঠে। তখন থেকে জাতীয় পার্টিকে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ হিসেবে আখ্যা দেন বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ অনেক রাজনৈতিক দল।