সংস্কারবিহীন নির্বাচন নতুন ফ্যাসিস্ট সৃষ্টি করবে শামসুজ্জামান হেলালী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম ১০ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী সাবেক চসিক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী বলেছেন, দুই সহস্রাধিক শহিদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে সংস্কার অত্যাবশক। সংস্কারবিহীন নির্বাচন নতুন ফ্যাসিস্ট সৃষ্টি করবে। এই ধরনের নির্বাচন শহিদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হবে। জনগণ ভোটের প্রতি আস্থা হারাবে।
তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরের খুলশী থানা আয়োজিত বিশাল শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা সভাপতি মুহাম্মদ নুরুন্নবী-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক স ম শামীম-এর সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলশী থানা ফেডারেশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়ীজ লীগের কার্যবরী সভাপতি সেলিম পাটোয়ারী, চসিক ১৪ নং ওয়ার্ডের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী কামরুল হুদা প্রমুখ।
শামসুজ্জামান হেলালী বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি দেশের মানুষকে আবারও বিভাজনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। আমরা আয়তনে ছোট দেশ কিন্তু বিভাজনে নানাভাগে বিভক্ত। জুলাই আন্দোলনে নতুন প্রজন্ম আমাদেরকে এক কাতারে এনে সমবেত করেছিল। ফলে আমরা দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। আমরা দেশের স্বার্থে, সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এক কাতারে থাকতে চাই। নতুন বাংলাদেশে আমরা আর ভেদাভেদ দেখতে চাই না। শ্রমিক জনতা ও মালিকদের মধ্যে রেষারেষি দেখতে চাই না। প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখতে চাই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে এসেও আমরা দেশকে কাক্সিক্ষত উন্নতির পথে নিয়ে যেতে পারিনি। আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানের করে গড়তে পারিনি। আমরা নতুন প্রজন্মকে দক্ষরূপে গড়ে তুলদে ব্যর্থ হয়েছি। ফলে দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন সাধিত হয়নি। এখনো প্রতিটি সূচকে আমাদের দেশ শেষের দিকে অবস্থান করছে। শুধু রাস্তা ঘাট ব্রীজ সেতু হলে দেশের উন্নয়ন হয় না। দেশের উন্নয়নের জন্য দক্ষ জনশক্তি ও নেতৃত্ব যেমন প্রয়োজন ঠিক তেমনিভাবে এসব মানুষের মাঝে সততা, একনিষ্ঠতা ও দেশপ্রেমের প্রতি প্রবল আবেগ থাকা জরুরি। যা আজকের বাংলাদেশে অনেক বেশি প্রয়োজন। আমরা দেখেছি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজন ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশকে লুটেপুটে খেয়েছে। হাজার হাজার কোটি বিদেশে পাচার করেছে। দখলবাজি, টেন্ডারবাজি ছিল নিত্য ঘটনা। আজকে আমরা প্রত্যক্ষ করছি লুটরাজদের ছেড়ে জায়গা একদল মানুষ নতুন করে রাজত্ব সৃষ্টি করছে করছে। আমরা তাদেরকে সাবধান করে দিয়ে বলতে চাই, দেশের মানুষ এখন আর অন্ধ নয়। তাদের প্রত্যেকের হাতে স্মার্ট ফোন আছে। তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারছেন কারা এসব অপকর্ম করছে। সুতরাং সময় সাবধান হোন। নিজেদের সংশোধন করুন। নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বার্থে অতীতের অপকর্ম ভুলে নতুন ধারার রাজনৈতিক চর্চা করুন। অন্যথায় দেশের মানুষ যেভাবে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছে আপনাদেরকেও ইতিহাসের আস্থাকুড়ে নিক্ষেপ করবে।
এস এম লুৎফর বলেন, চট্টগ্রাম নগর দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হলেও সেভাবে এই নগরের উন্নয়ন হয়নি। আগামী দিনে চট্টগ্রাম সহ সারা দেশকে গড়ার জন্য চট্টগ্রামের শ্রমিক জনতা সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্বকে নির্বাচন করবে ইনশাআল্লাহ। চাঁদাবাজ, দখলদার ও অপরাজনীতির দিন শেষ। আগামীর বাংলাদেশ হবে শ্রমিক জনতার বাংলাদেশ।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন খুলশি থানার সহ-সভাপতি এস এম আকরাম লালখান বাজার ওয়ার্ড সভাপতি আবদুল মান্নান, সমাজ সেবক শামসুল হক, জামায়াত নেতা মাস্টার জাহাঙ্গীর, শ্রমিক নেতা মজিবুল হক মজুমদার, মুহাম্মদ আলাউদ্দিন প্রমূখ।