শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরা সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে ঢাকা নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলামের মুখ চেপে ধরা পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আরশাদ হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এই আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক। এর আগে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। সেই পরোয়ানার ভিত্তিতে আজ তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ ও গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম। শুনানিতে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, আব্দুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার মইনুল করিম এবং সাইমুম রেজা।
শুনানিতে প্রসিকিউটরগণ আরশাদ হোসেনের অপেশাদার আচরণ এবং পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার বিষয়টি তুলে ধরেন। তারা দাবি করেন, শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরা ঘটনা পুলিশের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেয় এবং এটি জনমনে পুলিশের প্রতি বিরূপ ধারণা সৃষ্টি করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আরশাদ হোসেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে নাহিদুল ইসলামের মুখ চেপে ধরার এই ঘটনার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এক বিশেষ আদেশে ডিএমপি জানিয়েছিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরা আরশাদ হোসেনের একটি অপেশাদার কর্মকাণ্ড। এই আচরণ পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং পুলিশের সম্মানহানি ঘটে।
শুধু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরা নয়, আরশাদ হোসেনের বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় ডিএমপি। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
ডিএমপির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, আরশাদ হোসেনের কর্মকাণ্ড তদন্তাধীন রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরার ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনেকেই পুলিশ বাহিনীর এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান এবং দোষী কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।