জাতীয়

বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি আন্দোলন প্রসঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটির বিবৃতি

সুপ্রিয় চিকিৎসকবৃন্দ। আপনারা জানেন, বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি আন্দোলন একটি যৌক্তিক আন্দোলন ছিল। বর্তমান সময়ে ২৫ হাজার টাকা ভাতা দিয়ে জীবনযাপন করা দুরূহ। যৌক্তিক কারণে আমরা ইতোপূর্বে তাদের দাবীর সাথে একমত পোষণ করি। তাদের আন্দোলন অসহিংস ও রাষ্ট্রবিরোধী না হওয়ায় আমরা তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করি।

আজ ২৯ ডিসেম্বর, তারা মহাসমাবেশের ডাকে। কথা ছিল তারা, সুশৃঙ্খলভাবে বিএসএমএমইউ বটতলায় আন্দোলন অবস্থান ধর্মঘট পালন করবে কিন্তু তারা তাদের কথা রাখেননি। দুপুর ১২ টার পর তারা শাহবাগ অবরোধ করেন। শাহবাগ অবরোধ করায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছে। আশেপাশে চার পাঁচটি হাসপাতাল থাকায় রোগীদের চিকিৎসা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সরকার তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে একটি মিটিং আযোজন করে। ওই মিটিং এর নেতৃত্ব দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধাপক সাইদুর রহমান। অধ্যাপক সাইদুর রহমানের আমন্ত্রণে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ), ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন। সেখানে বেসরকারি ট্রেনিং চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। বেসরকারি ট্রেনিং চিকিৎসকদের পক্ষে ডা. জাবির হোসেন ডা. নুরুন্নবী, ডা. ইমরান শিকদার অংশগ্রহণ করেন। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী আলোচনা হয়। পরে সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় জানুয়ারি মাস থেকে ভাতার পরিমান ত্রিশ হাজার টাকা ও জুলাই মাস থেকে ৩৫ হাজার টাকা করা হবে। এনডিএফ, ড্যাব, জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের দল এই সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে ট্রেইনি চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল শাহবাগে ফিরে গিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়। তাদের এই সিদ্ধান্ত হটকারীমূলক। সরকার ভাতা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। তাদের দাবি অনুযায়ী নবম গ্রেডের সমপরিমাণ বেতনের চেয়েও ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। কাজেই তাদের আন্দোলন কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে কিছু তথ্য এসেছে তারা সরকারকে বিব্রত করার জন্য এই আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। আমরা জেনেছি এই আন্দোলনের পেছনে পতিত স্বৈরাচার সরকারের কিছু দুষ্কৃতিকারী জড়িত হয়ে পড়েছে। পতিত স্বৈরাচারের দুষ্কৃতিকারীরা এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করছে।

আমরা পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করছি, চিকিৎসকদের ন্যায়সঙ্গত যে কোন আন্দোলনের সাথে আমরা একাত্মতা পোষণ করব। কিন্তু রাষ্ট্রবিরোধী ও স্বৈরাচারদের উস্কানিতে কোন আন্দোলন করা হলে সেখানে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা থাকবে না। যেহেতু দেশের চিকিৎসকদের তিনটি বড় সংগঠন সরকারের ঘোষণার সাথে একমত পোষণ করেছে, কাজেই আমরা বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধির সাথে পূর্বে একমত পোষণ করলেও এখন এই আন্দোলনের সাথে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

আমরা বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের দ্রুত কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য আহবান জানাই। ইতোমধ্যে গত সাত দিন ধরে তারা কমবিরতি পালন করছেন। এতে করে অসহায় রোগীরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসকের কাজ রোগীর সেবা করা তাদের জিম্মি করা নয়। আমরা চিকিৎসকদের অনুরোধ করবো আপনারা শাহবাগ ছেড়ে হাসপাতালে যান, মানুষের ভোগান্তি দূর করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button