আকাশ মন্ডল একাই সাতজনকে হত্যা করে : র্যাব
চাঁদপুরের হাইমচরে জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান (২৬) ক্ষোভ থেকে জাহাজের মাস্টারকে হত্যা করেন। পরে ধরা পড়ার ভয়ে অন্যদেরও হত্যার পরিকল্পনা করেন। তিনি একাই এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। তাকে গ্রেপ্তারের পর আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র্যাবের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
আজ ২৫ ডিসেম্বর বুধবার দুপুর ১২টায় কুমিল্লা নগরের শাকতলা এলাকায় র্যাব-১১-এর সিপিসি-২ কুমিল্লা কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিং হয়।
সেখানে এ সব তথ্য জানান র্যাব-১১-এর উপ–অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
র্যাব জানান, নিয়মিত বেতন-ভাতা ও ছুটি না পাওয়ার জেরে এমভি আল-বাখেরা জাহাজের মাস্টারের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন আকাশ। ঘটনার সময় খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে প্রথমে মাস্টারকে হত্যা করেন তিনি। এরপর চিন্তা করেন, অন্যরা জীবিত থাকলে তিনি সহজেই ধরা পড়ে যাবেন। তখন জাহাজে থাকা বাকি সবাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। জাহাজে থাকা অন্য সাতজনকে আঘাত করেন। এর মধ্যে একজন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করা জাহাজটিতে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১১ ও র্যাব-৬ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাগেরহাটের চিতলমারি থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। তিনি জাহাজটিতে প্রায় ৮ মাস ধরে লস্কর পদে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পেশকৃত ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে, আন্দোলন করছে। যদি মালিক পক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতেন, তাহলে হয়তো এ ধরনের নারকীয় ঘটনা ঘটতো না। চাকরি করে নিয়মিত বেতন ভাতা না পাওয়ার ফলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং ক্ষোভে পরবর্তীতে হত্যার মতো ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের নারকীয় ঘটনা কোন মতে কাম্য নয়। তিনি বলেন আরও অধিকতর তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে ঘটনার সাথে জড়িত ছিল যারা, তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে এবং নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সহ পরিবারের সদস্যকে চাকরি দিতে হবে, আহতদের কে সরকারি খরচে চিকিৎসা ও আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হউক। ক্ষোভ প্রকাশ করে মো : নুরুল হুদা চৌধুরী বলেন, মালিক পক্ষ শ্রমিকদের স্বার্থ চিন্তা করে না কখনো। মালিক পক্ষ আমাদের ১১ দফা দাবি না মানলে এ ধরনের নারকীয় ঘটনা আরও ঘটবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে?