জলাবদ্ধতা নিরাসনে খাল খনন করতে চান মেয়র ডা. শাহাদাত
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসণে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচিতে সমাধান দেখছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
শনিবার চন্দনাইশের কাশেম মাহবুব উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চন্দনাইশ উপজেলা, চন্দনাইশ পৌরসভা ও দোহাজারী পৌরসভা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেয়র এ মন্তব্য করেন।
জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচিকে পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান জানান মেয়র। তিনি বলেন, “জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে কারণ জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে জনসম্পৃক্ত কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। কেবল হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প করে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। কারণ যেই নালা-খাল হাজার কোটি টাকা খরচ করে বানানো হয়েছে তা যদি জনগণ দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন না রাখে তাহলে জলাবদ্ধতার সমস্যা কোনদিনও সমাধান হবে না। এজন্য শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দেখানো পথে হাঁটতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে নগরীর খাল ও বড় নালাগুলো পরিষ্কার করতে হবে। খাল খনন কর্মসূচি এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
ডা. শাহাদাত জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামের যানজট নিরসনে কর্ণফুলী ব্রিজের পাশে একটি টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ দক্ষিণ চট্টগ্রামের যানজট নিরসনে কর্ণফুলী ব্রিজের পাশে একটি টার্মিনাল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। জায়গা চিহ্নিত করে ডিসি মহোদয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেছি। আশা করি, এটি শীঘ্রই বাস্তবায়ন হবে।”
সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম প্রসারের লক্ষ্যে ৪১ ওয়ার্ডের বাইরের এলাকাগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “চট্টগ্রামকে একটি ক্লিন, গ্রিন, এবং হেলদি সিটিতে রূপান্তর করার লক্ষ্য নিয়ে আমি কাজ করছি। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিং প্রসেস চালু করে ময়লা-আবর্জনাকে সম্পদে রূপান্তর করার পরিকল্পনা করেছি।
বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে নগরায়ন ও শিল্পায়ন বৃদ্ধি পাওয়ায় যুগের চাহিদা মেটাতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সীমানা বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মেয়র জানান, “কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, এবং জাপানের রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠক করেছি। তাদের সহায়তায় চট্টগ্রামকে আধুনিক শহরে রূপান্তরিত করতে কাজ করছি।”
দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে জেল-জুলুমের মধ্যেও লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় চন্দনাইশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মেয়র। মেয়র তার বক্তব্যে ২০১৮ এবং ২০২১ সালের নির্বাচনের সময়কালে চন্দনাশের জনগণের নির্ভীক ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “কোভিড-১৯-এর ভয় উপেক্ষা করে আপনারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন, তবুও গণতন্ত্রের সংগ্রামে পিছু হটেননি।” মেয়র আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, “তারা ১৬ বছর ধরে দুর্নীতি ও দমন-পীড়ন চালিয়েছে। কিন্তু জনগণের শক্তি এবং জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রতি আমাদের আস্থা অটুট। আপনাদের যে কোনো সমস্যা হলে মেয়র ভবনে চলে আসুন। আমি আপনাদের জন্য আছি।”
দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে জেল-জুলুমের মধ্যেও লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় চন্দনাইশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মেয়র। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন , চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর। সভা আয়োজন কমিটির আহবায়ক ইখতিয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, শহীদ খান, বাহার উদ্দীন, সাইফুল করিম, আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপি ‘র যুগ্ম আহ্বায়ক অলি হোসেন মুন্সী, মোরশেদুল আলম, জহিরুল আলম শহীদ, সদস্য আবু মালেক, মুজিবুর রহমান, হাবিবুর রহমান, নাজিম উদ্দিন, মোঃ সেলিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল মজিদ শাহ, আবু বক্কর, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম টুটুল, আজম খান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রবিউল হোসেন ছোটন, হেলাল উদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোনায়েম খান, সদস্য সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সেলিম উদ্দিন, সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ), এডভোকেট মিজানুল হক, নজরুল ইসলাম, এমদাদুল হক, আব্দুল মাবুদ, গাফফার চৌধুরী, এম এ হাশেম রাজুসহ বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।