হিট অফিসারকে মাসে ৮ লাখ টাকা বেতন দিতেন আতিক
মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা থেকে গতকাল বুধবার (১৬ অক্টোবর) মো. আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা হত্যামামলায় তাকে আসামি করা হয়েছিল, পাশাপাশি আরো একাধিক মামলায় তার নাম রয়েছে। তাকে ঘিরে উঠে আসছে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ।
আতিকুল ইসলাম ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র থাকাকালে তার আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিলেন।
এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তিনি নগর ভবনে নিজের প্রভাব বিস্তার করেন। তার ভাতিজা এবং ভাগিনাদের বিভিন্ন প্রভাবশালী পদে বসিয়ে তারা সিটি করপোরেশনের ব্যবসা ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন।
এমনকি তার ভাগিনা তৌফিক ডিএনসিসির মধ্যে দ্বিতীয় মেয়র হিসেবে পরিচিত ছিলেন, যার দাপটে অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চুপ থাকতে বাধ্য হতেন। তিনি তার মেয়ে বুশরা আফরিনকে ‘চিফ হিট অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেন।
পারিবারিক সদস্যদের দিয়ে ডিএনসিসির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে নিয়ন্ত্রণ বসিয়ে সুবিধা আদায় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিনা বিজ্ঞপ্তিতে সাবেক মেয়র আতিক তার মেয়ে বুশরা আফরিনকে চিফ হিট অফিসার পদে নিয়োগ দেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনকভাবে বুশরাকে মাসে ৮ লক্ষ টাকা করে বেতন দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি গাড়ি দিয়ে রাস্তায় পানি দিয়েই নাকি তিনি হিট প্রশমিত করেছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘বিনাভোটে নির্বাচিত হন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য রাজনীতিতে আসেন।’
বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে ঢাকা উত্তর উত্তর সিটিতে উল্লেখ করে এ আইনজীবী বলেন, ‘ওখানে উনি মশার ওষুধ আনার জন্য যাকে দায়িত্ব দেন তিনি ছিলেন তার নিকট আত্মীয়। তিনি আসল ওষুধ না এনে নকল ওষুধ এনে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। আমরা আদালতকে বলেছি, এ কারণে তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হওয়া উচিৎ।
ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের সময় যখন মানুষ-ছাত্ররা গুলিতে মারা যাচ্ছিল তখন আতিকুল ইসলাম তার বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে গান গান, বাঁশি বাজান এবং নাচেন। তিনি পালিয়ে যাওয়ার অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু পারেননি। তিনি জামিন পেলে পালিয়ে গিয়ে দেশে অশান্তির সৃষ্টি করবেন। তাই তাকে এই মুহূর্তে জামিন দেওয়া যাবে না। বিজ্ঞ আদালত উভয়পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।’