ধ্রুবকন্ঠ

হানি ট্র্যাপের ফাঁদ পেতে বাবাকে খুন: আদালতে স্বীকারোক্তি ছেলের



হানি ট্র্যাপের ফাঁদ পেতে বাবাকে খুন: আদালতে স্বীকারোক্তি ছেলের
ছবি সংগৃহীত

সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে বাবাকে হত্যার দায়ে মো.আনোয়ারকে (৪০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই চট্টগ্রাম ইউনিট। আনোয়ার আদালতে স্বীকার করেছেন, তার ভাইয়ের পরিকল্পনায় হানি ট্র্যাপে ফেলে বাবাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়।

আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট প্রধান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে ২০২৪ সালের ৭ জুন সকালে মীর মজিবুর রহমান খানকে নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ে আদালতে ফৌজদারি দরখাস্ত দায়ের করলে আদালতের নির্দেশে পিবিআই মামলার তদন্তের ভার নেয়। পরবর্তী তদন্তে হত্যার ঘটনার প্রমাণ পেয়ে ছেলে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আনোয়ার স্বীকার করেছেন, সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই তার ভাই বেলাল মিলে নিজের বাবাকে হত্যা করেছেন।

 

নিহত মীর মজিবুর রহমান খান (৭০) চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি এলাকায় বসবাস করতেন।

চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের বাসিন্দা মীর মুজিবের বেশ সম্পত্তি ছিল। মুজিবের প্রথম সংসারের সন্তান মো. বেলাল, আনোয়ার, বোন ফিরোজা সুলতানা মনু এবং ভাই মীর মাহবুব রহমান খান নান্টু, ও মীর মোশারফ হোসেন খান বাদলকে আসামি করে দ্বিতীয় সংসারের মেয়ে সালমা খানম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

 

জানা যায়, মীর মুজিব খান দ্বিতীয় বিয়ে করলে প্রথম স্ত্রী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে মারা যান। মা হারিয়ে বাবার সংসারে স্থান হওয়ায় বেলাল ও আনোয়ার ফটিকছড়িতে গিয়ে মামাদের কাছে আশ্রয় নেন।

সেখাইনেই তারা বড় হন। মুজিবের সম্পত্তি ছিল ১৮ কানি (২০ গন্ডায় এক কানি)। তিনি দ্বিতীয় বিয়ের পর সম্পত্তি বিক্রি শুরু করেন। গত বছর যখন তাকে অপহরণ করা হয় তখন তার সম্পত্তি ছিল মাত্র ৭ গন্ডা। সেই সাত গন্ডা সম্পত্তি রক্ষায় বাবাকে তারা হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে আদালতে জানান আনোয়ার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল আলম জানান, আনোয়ারসহ কয়েকজন আসামি পূর্বপরিকল্পিতভাবে এক নারীকে ব্যবহার করে ভুক্তভোগী মীর মজিবুর রহমান খানকে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে বাসায় নিয়ে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে অজ্ঞান করে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ জানায়, আনোয়ারের ভাই বেলাল বাবার লাশের সন্ধান দিতে পারবে। আর ঘটনায় যে নারীকে ব্যবহার করে মুজিবকে ঘর থেকে বের করা হয়েছে তার পরিচয়ও জানা যাবে।

২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রাতে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থানাধীন ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় লাগেজ ভর্তি একটি লাশের আটটি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করেছিল পতেঙ্গা থানা পুলিশ। তিনি স্ত্রী সন্তানদের ছেড়ে দুই যুগের বেশি সময় মৌলভীবাজারে ছিলেন। এলাকায় ফিরে এসে জমি বিক্রি করতে গেলে সন্তানদের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়। সেই বিরোধে তাকে সন্তানরা মিলে খুন করে টুকরো টুকরো করে খালে ফেলে দেয়। সেই ঘটনায় তার পুত্রবধূর একটি বক্তব্য ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। ‘তখন আমার আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি।’ দুই বছরের মাথা পিবিআই সম্পত্তি নিয়ে একই এলাকার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করল।

আপনার মতামত লিখুন

ধ্রুবকন্ঠ

বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫


হানি ট্র্যাপের ফাঁদ পেতে বাবাকে খুন: আদালতে স্বীকারোক্তি ছেলের

প্রকাশের তারিখ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে বাবাকে হত্যার দায়ে মো.আনোয়ারকে (৪০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই চট্টগ্রাম ইউনিট। আনোয়ার আদালতে স্বীকার করেছেন, তার ভাইয়ের পরিকল্পনায় হানি ট্র্যাপে ফেলে বাবাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়।

আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট প্রধান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে ২০২৪ সালের ৭ জুন সকালে মীর মজিবুর রহমান খানকে নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ে আদালতে ফৌজদারি দরখাস্ত দায়ের করলে আদালতের নির্দেশে পিবিআই মামলার তদন্তের ভার নেয়। পরবর্তী তদন্তে হত্যার ঘটনার প্রমাণ পেয়ে ছেলে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আনোয়ার স্বীকার করেছেন, সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই তার ভাই বেলাল মিলে নিজের বাবাকে হত্যা করেছেন।

 

নিহত মীর মজিবুর রহমান খান (৭০) চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি এলাকায় বসবাস করতেন।

চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের বাসিন্দা মীর মুজিবের বেশ সম্পত্তি ছিল। মুজিবের প্রথম সংসারের সন্তান মো. বেলাল, আনোয়ার, বোন ফিরোজা সুলতানা মনু এবং ভাই মীর মাহবুব রহমান খান নান্টু, ও মীর মোশারফ হোসেন খান বাদলকে আসামি করে দ্বিতীয় সংসারের মেয়ে সালমা খানম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

 

জানা যায়, মীর মুজিব খান দ্বিতীয় বিয়ে করলে প্রথম স্ত্রী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে মারা যান। মা হারিয়ে বাবার সংসারে স্থান হওয়ায় বেলাল ও আনোয়ার ফটিকছড়িতে গিয়ে মামাদের কাছে আশ্রয় নেন।

সেখাইনেই তারা বড় হন। মুজিবের সম্পত্তি ছিল ১৮ কানি (২০ গন্ডায় এক কানি)। তিনি দ্বিতীয় বিয়ের পর সম্পত্তি বিক্রি শুরু করেন। গত বছর যখন তাকে অপহরণ করা হয় তখন তার সম্পত্তি ছিল মাত্র ৭ গন্ডা। সেই সাত গন্ডা সম্পত্তি রক্ষায় বাবাকে তারা হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে আদালতে জানান আনোয়ার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল আলম জানান, আনোয়ারসহ কয়েকজন আসামি পূর্বপরিকল্পিতভাবে এক নারীকে ব্যবহার করে ভুক্তভোগী মীর মজিবুর রহমান খানকে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে বাসায় নিয়ে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে অজ্ঞান করে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ জানায়, আনোয়ারের ভাই বেলাল বাবার লাশের সন্ধান দিতে পারবে। আর ঘটনায় যে নারীকে ব্যবহার করে মুজিবকে ঘর থেকে বের করা হয়েছে তার পরিচয়ও জানা যাবে।

২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রাতে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থানাধীন ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় লাগেজ ভর্তি একটি লাশের আটটি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করেছিল পতেঙ্গা থানা পুলিশ। তিনি স্ত্রী সন্তানদের ছেড়ে দুই যুগের বেশি সময় মৌলভীবাজারে ছিলেন। এলাকায় ফিরে এসে জমি বিক্রি করতে গেলে সন্তানদের সঙ্গে বিরোধ শুরু হয়। সেই বিরোধে তাকে সন্তানরা মিলে খুন করে টুকরো টুকরো করে খালে ফেলে দেয়। সেই ঘটনায় তার পুত্রবধূর একটি বক্তব্য ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল। ‘তখন আমার আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি।’ দুই বছরের মাথা পিবিআই সম্পত্তি নিয়ে একই এলাকার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করল।


ধ্রুবকন্ঠ

“তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম”

কপিরাইট © ২০২৫ ধ্রুবকন্ঠ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত