চট্টগ্রাম বন্দর
বিদেশি কম্পানিকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সমাবেশ ও নৌপরিবহন
মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী
বাম মোর্চা।
আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনসংলগ্ন জিপিও মোড়ে
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাম নেতারা এসব কথা বলেন।
তাঁরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার
টার্মিনাল এবং মোংলা বন্দর কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ডিপি ওয়ার্ল্ড নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে
সরকার চুক্তি করতে চায়।
দেশের
স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
এর
আগে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক
জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা। এরপর তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয়
অভিমুখে রওয়ানা দিলে জিপিও মোড়ে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
সেখানে
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা অভিযোগ করেন এবং বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি (ডিপি ওয়ার্ল্ড)
যেসব দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পেয়েছে, সেখানে তাদের কাজ নিয়ে বদনাম রয়েছে।
বিদেশি
কোম্পানি বন্দর পরিচালনা করার দায়িত্ব নিলে সেখানে দেশীয় কর্মীদের ছাঁটাই করবে।
তার দায় যাতে ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে না যায়, সেজন্য আগে থেকেই সেখানকার শুল্ক ৪১
শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার যদি এই চুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে
সরকার সরে না আসে তাহলে বাম দলগুলো তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে অন্তর্বর্তী
সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান হবে।সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক
ও বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, জিবুতি নামের দেশ ডিপি ওয়ার্ল্ডের
কাছে বন্দর ইজারা দিয়েছিল। তবে দেশের স্বার্থ হানি হচ্ছিল, তাই তারা সেই চুক্তি
বাতিল করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা ঋণমুক্ত হতে পারেনি। এরপর বিদেশি কম্পানি
বন্দর পরিচালনা করার দায়িত্ব নিলে সেখানে দেশীয় কর্মীদের ছাঁটাই করা হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ভারতের স্বার্থ রক্ষা করত।
সে
কারণেই তাকে উচ্ছেদের জন্য গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল। এখন অন্তর্বর্তী সরকার
দেশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে ইজারা দেওয়ার পায়তারা করছে। তার অংশ হিসেবে
বন্দর ইজারা দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এখনো সময় আছে। দেশবিরোধী চুক্তি থেকে ফিরে না
আসলে এই সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সরকার
বর্তমান সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আগামী ৮ নভেম্বর বাম গণতান্ত্রিক জোট ও
ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চাসহ অপরাপর বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলো চট্টগ্রামে সমাবেশ
করবে বলা জানান তিনি। তিনি বলেন, এরপরও সরকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেওয়া
হবে। এরপর প্রয়োজনে সরকারের বিরুদ্ধে সর্বনাত্মক আন্দোলন হরতাল, অবরোধ সহ কঠোর
কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সমাবেশে বাংলাদেশের
কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, বাম গণতান্ত্রিক
দলগুলোর একজন নেতা-কর্মী জীবিত থাকতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে কোনভাবেই
বিকিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। সেজন্য ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন,
ডিপি ওয়ার্ল্ড বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পেয়েছিল, সেখানে
তাদের অনেক বদনাম হয়েছে। যে দেশের বন্দরে মার্কিন সেনাবাহিনী যায়, যেই দেশের
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বলতে কিছু থাকতে পারে না। এই কারণে বাম দলগুলো ডিপি
ওয়ার্ডের বিরোধিতা করছে। ডিসেম্বর মাসে যে চুক্তি করার কথা আছে, যদি সেই চুক্তির
সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসে, তাহলে বাম দলগুলো এবং সাম্রাজ্য বিরোধী সকল
শক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে রক্ষা করবে।
এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশে বাংলাদেশের সাম্যবাদী
আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, বঙ্গোপসাগর আজ মার্কিন
সাম্রাজ্যবাদের একটা যুদ্ধক্ষেত্রের মহড়া দেওয়ার জায়গা হিসেবে তৈরি হচ্ছে। আর
বাংলাদেশকে সেই যুদ্ধক্ষেত্রের একটা পটভূমি তৈরি করবার কাজ করছে বর্তমান ইউনূস
সরকার।
তিনি বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী তৎপরতার নামে নৌবন্দর
মার্কিনিদের কর্তৃত্বে দেওয়ার যে ব্যবস্থা হচ্ছে, সেখান থেকে সরকারকে সরে আসতে
হবে। তারপরও যদি ইউনুস সরকার এখান থেকে সরে না আসে তাহলে পরবর্তীতে বৃহত্তর
কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন ফ্যাসিবাদীবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও
গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহম্মদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির
নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির
জাহিদ প্রমুখ।
.png)
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৭ অক্টোবর ২০২৫
চট্টগ্রাম বন্দর
বিদেশি কম্পানিকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সমাবেশ ও নৌপরিবহন
মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী
বাম মোর্চা।
আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনসংলগ্ন জিপিও মোড়ে
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাম নেতারা এসব কথা বলেন।
তাঁরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রামের নিউমুরিং কনটেইনার
টার্মিনাল এবং মোংলা বন্দর কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ডিপি ওয়ার্ল্ড নামের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে
সরকার চুক্তি করতে চায়।
দেশের
স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
এর
আগে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক
জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা। এরপর তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয়
অভিমুখে রওয়ানা দিলে জিপিও মোড়ে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
সেখানে
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা অভিযোগ করেন এবং বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি (ডিপি ওয়ার্ল্ড)
যেসব দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পেয়েছে, সেখানে তাদের কাজ নিয়ে বদনাম রয়েছে।
বিদেশি
কোম্পানি বন্দর পরিচালনা করার দায়িত্ব নিলে সেখানে দেশীয় কর্মীদের ছাঁটাই করবে।
তার দায় যাতে ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে না যায়, সেজন্য আগে থেকেই সেখানকার শুল্ক ৪১
শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার যদি এই চুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে
সরকার সরে না আসে তাহলে বাম দলগুলো তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে অন্তর্বর্তী
সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান হবে।সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক
ও বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, জিবুতি নামের দেশ ডিপি ওয়ার্ল্ডের
কাছে বন্দর ইজারা দিয়েছিল। তবে দেশের স্বার্থ হানি হচ্ছিল, তাই তারা সেই চুক্তি
বাতিল করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা ঋণমুক্ত হতে পারেনি। এরপর বিদেশি কম্পানি
বন্দর পরিচালনা করার দায়িত্ব নিলে সেখানে দেশীয় কর্মীদের ছাঁটাই করা হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ভারতের স্বার্থ রক্ষা করত।
সে
কারণেই তাকে উচ্ছেদের জন্য গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল। এখন অন্তর্বর্তী সরকার
দেশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে ইজারা দেওয়ার পায়তারা করছে। তার অংশ হিসেবে
বন্দর ইজারা দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এখনো সময় আছে। দেশবিরোধী চুক্তি থেকে ফিরে না
আসলে এই সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সরকার
বর্তমান সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আগামী ৮ নভেম্বর বাম গণতান্ত্রিক জোট ও
ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চাসহ অপরাপর বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলো চট্টগ্রামে সমাবেশ
করবে বলা জানান তিনি। তিনি বলেন, এরপরও সরকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দেওয়া
হবে। এরপর প্রয়োজনে সরকারের বিরুদ্ধে সর্বনাত্মক আন্দোলন হরতাল, অবরোধ সহ কঠোর
কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সমাবেশে বাংলাদেশের
কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, বাম গণতান্ত্রিক
দলগুলোর একজন নেতা-কর্মী জীবিত থাকতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে কোনভাবেই
বিকিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। সেজন্য ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন,
ডিপি ওয়ার্ল্ড বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পেয়েছিল, সেখানে
তাদের অনেক বদনাম হয়েছে। যে দেশের বন্দরে মার্কিন সেনাবাহিনী যায়, যেই দেশের
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বলতে কিছু থাকতে পারে না। এই কারণে বাম দলগুলো ডিপি
ওয়ার্ডের বিরোধিতা করছে। ডিসেম্বর মাসে যে চুক্তি করার কথা আছে, যদি সেই চুক্তির
সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসে, তাহলে বাম দলগুলো এবং সাম্রাজ্য বিরোধী সকল
শক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে রক্ষা করবে।
এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশে বাংলাদেশের সাম্যবাদী
আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, বঙ্গোপসাগর আজ মার্কিন
সাম্রাজ্যবাদের একটা যুদ্ধক্ষেত্রের মহড়া দেওয়ার জায়গা হিসেবে তৈরি হচ্ছে। আর
বাংলাদেশকে সেই যুদ্ধক্ষেত্রের একটা পটভূমি তৈরি করবার কাজ করছে বর্তমান ইউনূস
সরকার।
তিনি বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী তৎপরতার নামে নৌবন্দর
মার্কিনিদের কর্তৃত্বে দেওয়ার যে ব্যবস্থা হচ্ছে, সেখান থেকে সরকারকে সরে আসতে
হবে। তারপরও যদি ইউনুস সরকার এখান থেকে সরে না আসে তাহলে পরবর্তীতে বৃহত্তর
কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন ফ্যাসিবাদীবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও
গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহম্মদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির
নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির
জাহিদ প্রমুখ।
.png)
আপনার মতামত লিখুন