আইনশৃঙ্খলা অবনতির দায়ে পদত্যাগের দাবিরমুখে আওয়ামী লীগকে দুষলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সারা দেশে বাড়তে থাকা অপরাধের জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অনুসারীদের দায়ী করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আজ সোমবার থেকে তাদের জীবন কঠিন করে তোলার হুঁশিয়ারি করেছেন।
সোমবার মধ্যরাত ৩টার দিকে রাজধানীর বারিধারার ডিওএইচএসে নিজ বাসভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে রাত পৌনে ১ টার দিকে সারা দেশে ছিনতাই, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে মধ্য রাতে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবারের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদত্যাগ দাবি করেন বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।
এর ২ ঘণ্টা পরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডেকেছি। এখন আমরা নির্ধারণ করব কীভাবে কী করা যায়। আগামীকাল থেকে আপনারা ডেফিনিট ইমপ্রুভমেন্ট দেখবেন।”
“দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে আমরা পূর্ণ সজাগ ও সচেতন” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করতে সব ধরনের চেষ্টা করছে। তারা প্রচুর টাকা দেশ থেকে স্থানান্তর করেছে। তারা এখন ওই টাকা ব্যবহার করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।”
“আমরা এটা কোনো অবস্থাতেই করতে দেবো না। আমরা যেভাবে হোক এটা প্রতিহত করব। দিনে-রাতে যখন প্রয়োজন হবে, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তখনই তাদের প্রতিহত করবে। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, এই আওয়ামী দোসর যারা এই কাজগুলো করছে, তাদের ঘুম হারাম করে দেবো,” বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
“অপরাধীদের কোথাও কোনো স্থান হবে না” জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে টহল কার্যক্রম বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে আগামীকাল (সোমবার) থেকে যেন কোথাও কিছু না ঘটে। বাহিনীগুলো কার্যকর ব্যবস্থা না নিতে পারলে, তাদের বিরুদ্ধেও অ্যাকশন নেওয়া হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিনে দিনে আরও উন্নতি হবে বলে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার পদত্যাগের দাবি আজকেই প্রথম না। যে কারণে পদত্যাগের কথা বলা হচ্ছে সেই কারণগুলোর যদি উন্নতি হয়, তাহলে তো পদত্যাগের প্রশ্ন থাকে না। তারা চাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন উন্নতি হয়, আমি সেটা করব।”
রোববার রাতে ঢাকার বনশ্রীতে এক ব্যবসায়ীকে গুলি ও কুপিয়ে স্বর্ণ ও টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।