ক্যাম্পাস বার্তা

একুশে বইমেলা শুরু হলো চবি ক্যাম্পাসে

‘বই হোক আনন্দ ও সচেতনতার উপকরণ‘ এ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ৫ দিন ব্যাপি (৯-১৩ ফেব্রুয়ারি) মহান একুশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বই মেলা-২০২৫ শুরু হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। আজ (৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সকাল ১০ টায় চবি বুদ্ধিজীবী চত্বরে বইমেলা উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন, চবি সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য এস.এম.ফজলুল হক ও সৃজনশীল প্রকাশনার সভাপতি মোঃ শাহাব উদ্দিন বাবু।

উপাচার্য বলেন, আজকের এ বইমেলা কেবলমাত্র বইয়ের প্রদর্শনী নয়, বরং এটি আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ভবিষ্যৎকে সংযুক্ত করার এক গুরুত্বপূর্ণ সেতু। বই জাতির চেতনার দর্পণ। একটি জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধি নির্ভর করে তার শিক্ষার মানের ওপর, আর বই হলো সে শিক্ষার অন্যতম প্রধান বাহন।

তিনি আরও বলেন, বইমেলা কেবল ব্যবসায়িক কার্যক্রম নয়, এটি এক সৃজনশীল বিপ্লব, যা আমাদের মনন ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষতা বাড়ায়। বর্তমানে মানসম্মত বই প্রকাশ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। প্রকাশনা জগতে চরম বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে প্রকাশকবান্ধব বইমেলা হচ্ছে, লেখকবান্ধব বইমেলা হচ্ছে না। আমাদেরকে এ সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। উপাচার্য এ বৈষম্য দূরীকরণে একটি অভিযোগ সেল গঠনের জন্য বাংলা একাডেমির প্রতি অনুরোধ জানান, যেখানে সাধারণ লেখকরা তাদের অভিযোগ করতে পারবেন। এ মেলার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের আলোয় নিজেদের সমৃদ্ধ করবে, এটাই সকলের প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানে চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) বলেন, ভাষা ও সাহিত্য চর্চাতে এবং প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে যে দেশ যত বেশি ভালো অবস্থানে রয়েছে, অর্থনৈতিকভাবে সে দেশ তত বেশি সমৃদ্ধ। ভাষার সাথে অর্থনীতি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি সবাইকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার ও আগামী প্রজন্মকে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা জন্মানোর আহবান জানান। অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য প্রতিবছর এ বইমেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দেন।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, বইমেলার মাধ্যমে পাঠকদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়। বইয়ের সান্নিধ্যে থেকে মানুষের মনের ভিতর যে চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন আনা যায়, সেগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেয়া দরকার। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে পাঠকের তুলনায় লেখকের সংখ্যা বেশি। কারণ মানুষ লিখতে চায় বেশি, পড়তে চায় কম। লেখক হয়ে উঠতে গেলেই কিন্তু আমাদেরকে পড়তে হবে। তাই তিনি সকলকে বেশি বেশি করে বই পড়ে লেখালেখি করার আহবান জানান।

চবি মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মুমতাহিনাহ্ জুঁই এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চবি সংস্কৃত বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী পুজা প্রামানিক ও ইংরেজি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আহমেদ শান্ত।

অনুষ্ঠানে বইমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সদস্য-সচিব প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর, সদস্য, চবি ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম হোসেন হাবীব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের নামকরা বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা এ বই মেলায় অংশগ্রহণ করছে। চবিতে বই মেলা ৯ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত ধাকবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button