জুলাইয়ের আহতরা মধ্যরাতে যমুনার সামনে, হাসনাতের আশ্বাসে হাসপাতালে ফিরলেন

সুচিকিৎসার দাবিতে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের উদ্যোগে ঢাকায় রোববার সকাল দশটার দিকে শুরু হওয়া আন্দোলন মধ্যরাত পার হয়ে সোমবার ভোরে শেষ হয়েছে।
রোববার রাত ১২টার কাছাকাছি সময়ে তারা পুলিশ ব্যরিকেড ভেঙে রাজধানীর মিন্টো রোডে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন যমুনার সামনে চলে যান। সেখানে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের শান্ত করতে মধ্যরাতে সেখানে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
একাধিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, হাসনাতের অনুরোধে সোমবার রাত পৌনে দুইটায় যমুনার প্রধান ফটক ছেড়ে হাসপাতালে ফিরতে শুরু করেন আহতরা। হাসনাত চলতি সপ্তাহের মধ্যে সুচিকিৎসাসহ পুনর্বাসনের বিষয়ে আহত তিনজনকে নিয়ে সচিবালয়ে যাবেন বলে জানান।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “আহতদের সুচিকিৎসা দিতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা। এজন্য সরকারের আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতি দায়ী, সচিবরা দায়ী, আমলারা দায়ী। যারা আহত হয়েছেন তাদের আমরা সুচিকিৎসা দিতে পারি নাই, এজন্য আমি নিজে ব্যথিত।”
এক আগে বিক্ষোভকারীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পৌঁছালে সেখানে দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এসময় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়।
সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে দিনভর সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন জাতীয় অর্থোপেডিক ইনস্টিটিউট ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল) এবং জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে আহতরা।
কাজ না হওয়ায় রাতে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পথে রওয়ানা হন। তবে পুলিশের বাধায় শেষ পর্যন্ত সেখানে পৌঁছাতে পারেননি তারা। পরীবাগ মোড়ে হোটেল ইন্টারনকন্টিনেন্টালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন তারা। সেখান থেকে ব্যারিকেড ভেঙে মধ্যরাতে যমুনার সামনে যান।
এর আগে রোববার সকাল থেকেই পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন আহতরা। পরে সকাল ১১টার দিকে তারা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে থেকে এগিয়ে শিশুমেলা মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় মিরপুর রোড ও শ্যামলী-আগারগাঁও সড়ক অবরোধ করেন তারা। ওই এলাকায় দিনভর ছিল প্রচণ্ড যানজট।
জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে আহতরা দীর্ঘ দিন ধরেই সুচিকিৎসায় ঘাটতির অভিযোগ করে আসছেন। উন্নত চিকিৎসার দাবি জানালেও এ বিষয়ে কেউ ‘গুরুত্ব দিচ্ছেন না’ বলে অভিযোগ তাদের।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এ শহীদ পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নীতিমালা, ২০২৫’ এর খসড়া করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক বিশেষ সেল।
শিগগির নীতিমালাটি চূড়ান্ত করে সহায়তা কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।