জাতীয় নাগরিক কমিটির “পাবনা রাইজিং” মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
তারিখ: ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
প্রেস রিলিজ
আজ ২৭ ডিসেম্বর, শুক্রবার পাবনা জেলার শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে জাতীয় নাগরিক কমিটির “পাবনা রাইজিং” মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মোঃ আসিফ রাজীব এর সঞ্চালনায় উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন শহীদ জাহিদ এর পিতা জনাব দুলাল মাস্টার। তিনি আন্দোলনে দোষীদের বিচার দাবী করেন এবং নতুন ফ্যাসিস্ট যেন না গঠিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান দেশবাসীর প্রতি। দেশগঠনে তারুণ্যকে এগিয়ে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেয়ায় তিনি জাতীয় নাগরিক কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।
উক্ত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পাবনা জেলা স্কুল এর সম্মানিত শিক্ষক জনাব আসাদুজ্জামান খান। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশগঠনে জনগনের আশা- আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন যেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মাধ্যমে হয়। তিনি ছাত্র জনতা এবং প্রবীণদের সমন্বয়ে দেশ গঠনে কাজ করতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পতনের পর সরকারী অফিস গুলোতে বিদ্যমান দূর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার এখনই সময় এবং আন্দোলনে নির্যাতনকারী ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির দাবী জানান অন্তবর্তী সরকারের কাছে।
উক্ত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পাবনা জজকোর্ট এর আইনজীবি জনাব এডভোকেট সুলতান মাহমুদ এহিয়া। তিনি ছাত্র-জনতার তাজা রক্ত ঢেলে ছিনিয়ে নিয়ে আসা স্বাধীনতা রক্ষায় জাতীয় নাগরিক কমিটিকে তৎপর থাকার তাগিদ দেন।
উক্ত সভায় জাতীয় নাগরিক কমিটির সহ মুখপাত্র জনাব তাহসিন রিয়াজ বলেন, আমরা সাধারণ জনগণের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জনতার হৃদয়ের পালস বুঝে কাজ করতে চাই। আমরা নতুন এবং সময়োপযোগী রাজনৈতিক দল গঠনের বন্দোবস্ত করছি। আগামীর দেশ গঠনে তারুণ্যের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি নতুন সিস্টেমে সকলকে সাথে নিয়ে দেশগঠনে কাজ করতে সকলকে আহ্বান জানান। উক্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব জনাব এস. এম. সাইফ মোস্তাফিজ পাবনা জেলাকে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি জুলাই গণহত্যার বিচারকে সামনে আনেন এবং বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই জুলাই গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে এবং এই মাটিতে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দোসরদের বিচার কার্যকর করতে হবে। তিনি এই সভা থেকে সকল রাজনৈতিক দলকে সংকীর্ণতা পরিহার করে জনগণের পালস বোঝার অনুরোধ করেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি থানায় থানায় কমিটির মাধ্যমে শক্তিশালী হচ্ছে। তিনি বলেন দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে ব্যর্থ সেই জায়গায় জনগণের চাহিদায় তরুন এবং জুলাই অভ্যুত্থান এর স্পিরিট ধারণ করে এমন অংশীজনদের নিয়ে জানুয়ারীর শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তরুনদের নতুন রাজনৈতিক দল আসছে।
তিনি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার তরুণদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে বলেন।
উক্ত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সভা শেষ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জনাব মনিরা শারমিন। তিনি বলেন, গত ৫৩ বছর শুধু জনগণের কাছ থেকে তার অধিকার কেড়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে, আমরা সে অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। সেক্ষেত্রে দেশের জনগণের নাগরিক অধিকার দাবি করতে রাজনৈতিক সচেতনতা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলি নাগরিক আস্থার কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে নি। সে কারণেই তরুণদের নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দেখতে চায় মানুষ। আসন্ন রাজনৈতিক দল নিয়ে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দল হবে তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে গঠিত রাজনৈতিক দল, যে দল নাগরিকের অধিকারের রাজনীতি করবে এবং জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের ফ্যাসিবাদী বিলোপের আকাঙ্ক্ষাই এই দলের শক্তি। তিনি তরুণ সমাজ ও নারীদের বাংলাদেশ পুনর্গঠনে এগিয়ে আসতে বলেন।
এ সভায় আরও বক্তব্য দেন, জুলাই বিপ্লবে চোখ হারানো মোঃ দ্বীপ মাহবুবও বক্তব্য রাখেন। এছাড়া পাবনা জেলার সমন্বয়ক মোঃ রাসেল আহমেদ, বরকতুল্লাহ ফাহাদ ফাহাদ, ইউসুফ আরফান বিপ্লব, সিরাজুম মুনিরা ও পাবনার সংগঠক খন্দকার মুনজিল হক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন।