প্রিন্ট এর তারিখ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||
প্রকাশের তারিখ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
হাদির হত্যার বিচারে নর্থ সাউথ শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটামা
ধ্রুবকন্ঠ ডেক্স ||
ইনকিলাব
মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই-যোদ্ধা শহীদ শরীফ ওসমান হাদিকে হত্যার বিচারের দাবিতে
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) ৮ নম্বর গেটের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের
ব্যানারে সম্মিলিত কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।আজ শুক্রবার (১৯
ডিসেম্বর) জুমার নামাজ শেষে এনএসইউ শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির আয়োজন করেন।
পরবর্তীকালে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এবং আমেরিকান
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি–বাংলাদেশ (এআইইউবি)-এর শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিয়ে
একাত্মতা প্রকাশ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
কর্মসূচি পালন করেন।কর্মসূচি
থেকে শিক্ষার্থীরা আগামী ৭২ ঘণ্টা থেকে ৭ দিনের মধ্যে হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত হয়ে
পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আলটিমেটাম দেন।এর আগে বিক্ষোভে অংশ
নেওয়া শিক্ষার্থীরা ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়ায় অংশ নেন। পাশাপাশি
তারা সবার সমন্বয়ে দ্রুত বিপ্লবী সরকার গঠনের আহ্বান জানান। এ সময় পুরো নর্থ সাউথ
বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।দেখা
যায়, নির্ধারিত সময়ের আগেই হাদি হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিতে এনএসইউ, এআইইউবি
ও আইইউবির শিক্ষার্থীরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জড়ো হতে থাকেন।
কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাশরাফি সরকার এবং
সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সদস্য-সচিব আতিক শাহরিয়া উপস্থিত
ছিলেন।
সমাবেশে মাশরাফি সরকার
বলেন, ‘এই দেশের সংকটময় লগ্নে ছাত্র-জনতার ঐক্যে যে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল, আজ
পরিতাপের বিষয় হলো সেই বিপ্লবের পর গঠিত তথাকথিত সুশীল ইন্টেরিম সরকার নিয়ে আমরা
নিজেরাই আজ লজ্জিত। জাতির কাছে লজ্জিত, বিশ্ববাসীর কাছেও লজ্জিত। বিপ্লবের ঠিক পরে
আমাদের এ ধরনের সুশীল, ব্যর্থ ইন্টেরিমের প্রয়োজন ছিল না। আমাদের প্রয়োজন ছিল একটি
বিপ্লবী ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট।‘
তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ
ওসমান হাদির মৃত্যুতে শুধু একজন মানুষ মারা যায়নি; আপনারা আমার ঘুমন্ত বিপ্লবীদের
জাগিয়ে তুলেছেন। বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার অন্যায়কারীরা, সন্ত্রাসবাদীরা—ছাত্র-জনতা
এক হয়ে কী করতে পারে, সেটা আপনারা ভুলে যাবেন না। আমি পরিষ্কারভাবে সাবধান করে
দিতে চাই—বিপ্লব শেষ হয়ে যায়নি। আমরা যদি আবার মাঠে নামি, পালাবার জায়গা পাবেন না।‘
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট
করে বলতে চাই, যারা হাদি ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এবং যারা এই হত্যার পর
খুনিদের সেফ এক্সিট দিয়েছে, শুধু খুনিরাই নয়—সেফ এক্সিট দেওয়া প্রত্যেককে এই
বাংলার জমিনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ছাত্র-জনতার ঐক্য এই কথাটা ভুলে যাবেন
না। ছাত্র-জনতা এক হলে দালাল, সুশীল চাটুকার ও বিশ্বাসঘাতকরা কোথাও জায়গা পাবে না।‘
হাদি হত্যাকাণ্ডে
জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মাশরাফি
সরকার বলেন, প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে অবশ্যই
আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ছাত্র-জনতার পক্ষ
থেকে আমরা ৭২ ঘণ্টা থেকে ৭ দিনের সময় দিচ্ছি—যারা পালিয়ে গেছে এবং যাদের শেল্টার
দেওয়া হয়েছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
পরিশেষে তিনি বলেন, ‘বাংলার
জমিনে আর কোনো হাদিকে শহীদ করার পরিকল্পনা যদি কারো মাথায় আসে, তাদের জন্য এটি
চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি। আর একটি ভাইয়ের লাশ নয়। অন্যায় ও রক্তের রাজনীতির সঙ্গে যারা
যুক্ত হবে, তাদের জন্য বাংলার জমিনে কোনো জায়গা থাকবে না—থাকবে না, থাকবেই না।‘
এনএম/ধ্রুবকন্ঠ
কপিরাইট © ২০২৫ ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত