প্রিন্ট এর তারিখ : ০১ জানুয়ারি ২০২৬ ||
প্রকাশের তারিখ : ২২ নভেম্বর ২০২৫
ভূমিকম্প আমাদের অহংকার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে আসে : আজহারীা
ধ্রুবকন্ঠ ডেক্স ||
গতকাল এর ভূমিকম্প নিয়ে দেশের জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী
বলেছেন, সকালের ভূমিকম্পে যখন আমাদের বিল্ডিংটা দুলছে, তখন কিছু মূহূর্তের জন্য একেবারে
স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আতঙ্কে বুকটা কাঁপছিল। আর কয়েকটা ঝাঁকুনি দিলে ঢাকায় হয়তো
আজকে লাশের মিছিল হতো। নিমেষেই গোটা শহর পরিণত হতো নিস্তব্ধ এক গোরস্থানে! দয়াময় এই
যাত্রায় আমাদের রক্ষা করেছেন। প্রভু হে, তুমি বড়ই মেহেরবান!তিনি
আরও বলেন, এমন অপরিকল্পিত নগরী, সারি সারি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, দুর্বল ডিজাস্টার
ম্যানেজমেন্ট; আল্লাহর দয়া ছাড়া বাঁচার কোনো উপায় আমাদের নাই। এই দুর্যোগগুলো
আমাদের জন্য গভীর সতর্কবার্তা। গোটা জনপদবাসীকে সামান্য এক ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি
রিমাইন্ডার দিচ্ছেন। বোঝাতে চাচ্ছেন— বাড়াবাড়ি সীমালঙ্ঘন যা-ই করো না কেন, নাটাই
কিন্তু আমার হাতে।চাইলে-ই
যে কোনো মুহূর্তে তোমাদের আমি ধুলিস্যাৎ করে দিতে পারি। তছনছ করে দিতে পারি
তোমাদের এই চোখ ধাঁধানো সভ্যতা। কোরআনের
ভাষ্যমতে— মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আসলে ভূমিকম্প আমাদের অহংকার
মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে আসে। আমাদের
অক্ষমতা দেখিয়ে দিতে আসে। আসে মহাশক্তিধর, মহাপ্রতাপশালী রাজাধিরাজ আল্লাহর সামনে
আমরা কতোটা অসহায় আর নিরূপায় তার নমুনা হিসেবে। তিনি তো সেই মহাপরাক্রমশালী
সত্তা যার মোকাবেলায় কেউ মাথা তুলতে পারে না, যার সিদ্ধান্তসমূহের পথে বাধা হয়ে
দাঁড়ানোর সাধ্য কারো নেই এবং যার ক্ষমতার সামনে সবাই অসহায় ও শক্তিহীন৷ আল্লাহু
আকবার! গত
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের
এক স্ট্যাটাসে এসকল কথা বলেন।তিনি
বলেন, জুমার দিনের (শুক্রবার, ২১ নভেম্বর) কতো প্ল্যান নিয়ে কিছু লোক আজ ঘর থেকে
বেরিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা না ফেরার দেশে।আমাদের
বেঁচে থাকাটাই যে আমাদের প্রতি আল্লাহর কত বড় দয়া; তা আমরা উপলব্ধি করি না। আচ্ছা
বলুন তো, মৃত্যু কি আমাদের জীবনের পরিকল্পনায় থাকে? জীবনের এতো এতো কাজ, ব্যস্ততা,
নানা পরিকল্পনা এগুলো কি আমরা মৃত্যুকে স্মরণ রেখে করি? অথচ মৃত্যুর নির্ধারিত
সময় আসলে তো আমাদের সকল ব্যস্ততাই শেষ হয়ে যাবে। আমিহীন দুনিয়ায় সবকিছু চলবে
ঠিক আগের মতোই। মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, কার মৃত্যু কখন, কীভাবে
আসবে সেটা কেউ জানে না। আমাদের উচিত সর্বদা প্রস্তুত থাকা। তওবা করে রবের কাছে
ফিরে আসা। একনিষ্ঠভাবে তার-ই কাছে সমর্পিত হওয়া।তিনি বলেন,
এ ভূমিকম্প তো কিছুই না। আসল ভূমিকম্প তো সেটা— যখন জমীন প্রকম্পিত হবে প্রবল
প্রকম্পনে। আর পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। অতঃপর তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায়
পরিণত হবে। (সুরা আল ওয়াকিয়াহ : ৪-৬)
উল্লেখ্য,
দেশ দুইদিনে তিনবার ভূমিকম্প হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প
অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বে নরসিংদীর মাধবদী
উপজেলায়। এরপর সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে ৩.৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সেটির
উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর পলাশ উপজেলায়। এরপরে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে
ভূমিকম্পে মৃদু ঝাঁকুনি অনুভূত হয়। এর মাত্রা ৩.৭ বলে জানা গেছে।
কপিরাইট © ২০২৬ ধ্রুবকন্ঠ | Dhruba Kantho । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত