প্রিন্ট এর তারিখ : ২০ নভেম্বর ২০২৫ ||
প্রকাশের তারিখ : ১৯ নভেম্বর ২০২৫
যুবদল নেতা কিবরিয়া হত্যার নেপথ্যে রাজনৈতিক কোন্দল : র্যাবা
ধ্রুবকন্ঠ ডেক্স ||
রাজধানীর
পল্লবী থানার যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়া (৫০) হত্যা মামলায় দুই শীর্ষ
সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৪)।গ্রেপ্তাররা হলেন
হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা
সোহেল (৩০) ও মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন (৩৫)।
র্যাব বলছে, পল্লবীর
রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডটি
সুপরিকল্পিত এবং বড় অঙ্কের অর্থের লেনদেন হয়েছে।
গ্রেপ্তার
দুজন মিরপুরকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ‘ফোর স্টার’ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। বুধবার
(১৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ
সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের
বরাতে র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র
করে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড যাতে বড় অঙ্কের
অর্থের লেনদেন হয়।আসামিরা
পেশাদার হত্যাকারী এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পাতা
সোহেলের নামে একাধিক হত্যা, ডাকাতি, মাদকসহ পল্লবী থানায় মোট ৮টি মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন মিরপুরকেন্দ্রিক গড়ে উঠা ‘ফোর স্টার’ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। ‘ফোর
স্টার’ গ্রুপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইব্রাহিম ও মামুন নিয়ন্ত্রিত যেসব
এলাকা রয়েছে সেসব এলাকায় এ ‘ফোর স্টার’ গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে
লিপ্ত ছিল।এক প্রশ্নের জবাবে
মাহবুব আলম বলেন, সোহেল ওরফে পাতা সোহেল অর্থ সরবরাহ করেছিলেন। তবে তিনি কিভাবে
অর্থ পেয়েছেন কিংবা কার কাছ থেকে পেয়েছেন সেটা এখনো পরিষ্কার নয়।হত্যাকাণ্ডের
মোটিভ সম্পর্কে প্রশ্নে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক বলেন, মিরপুর এলাকাকেন্দ্রিক আধিপত্য
বিস্তার চাঁদাবাজি-মাদক ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং দ্বিতীয়টি হলো
রাজনৈতিক কোন্দল। নিহত গোলাম কিবরিয়া একটি রাজনৈতিক দলের সদস্যসচিব এবং মিরপুর
এলাকায় রাজনৈতিকভাবে তিনি খুব সক্রিয় ছিলেন। এর আগে গোলাম কিবরিয়ার যাদের সঙ্গে
সখ্য ছিল রাজনৈতিক মেরুকরণের পরে তাদের বিরুদ্ধে তিনি কাজ করছিলেন।বিশেষ
করে এলাকায় চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারিতে নিহত গোলাম কিবরিয়ার সাপোর্ট ছিল না। হয়তো
এ কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামুনের
সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মামুনের সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে কি
না, তা অনুসন্ধান চলছে। হত্যাকাণ্ডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কানেকশন থাকতে পারে তবে
সবাইকে গ্রেপ্তার করলে রহস্য উন্মোচিত হবে।’এর আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত
১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পল্লবী থানাধীন বিক্রমপুর স্যানিটারি ও হার্ডওয়্যার দোকানে
ছয়জন অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে বুকে ও পিঠে অতর্কিত গুলি করে
পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করে। ঘটনাস্থল থেকে পালানোর
সময় স্থানীয় জনতার ওপর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে এবং এতে একজন রিকশাচালক
গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হন। পরবর্তীতে ছাত্র-জনতা তাদের ধাওয়া করে জনি ভূইয়া
নামক একজন সন্ত্রাসীকে আটক করে পল্লবী থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে।ঘটনার পরপরই র্যাব-৪-এর একটি
আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং আনুষঙ্গিক তথ্যাদি
বিশ্লেষণ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত
শুরু করে।
গত মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে সাভার
থানাধীন বিরোলিয়া এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো. মনির
হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল এবং টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজার বস্তি এলাকা
থেকে হত্যাকাণ্ডের সন্দিন্ধ ও ১৮টি মামলার শীর্ষ ও পলাতক সন্ত্রাসী মো. সুজন ওরফে
বুকপোড়া সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কপিরাইট © ২০২৫ ধ্রুবকন্ঠ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত