প্রিন্ট এর তারিখ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ||
প্রকাশের তারিখ : ২৮ অক্টোবর ২০২৫
খালেদা জিয়ার কারাভোগ মিথ্যা মামলায়: আবদুল হাই শিকদারা
ধ্রুবকন্ঠ ডেক্স ||
বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ও
দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায়
কারাভোগ করতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও অন্যান্য অভিযোগে
আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চারটি মামলা দেওয়া হয়েছে। অথচ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। এই রাষ্ট্র
গঠনে আমারও ভূমিকা আছে। একজন মুক্তিযোদ্ধাই পারে আরেকজন মুক্তিযোদ্ধার
বিচার করতে।'আজ
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের ৩য়
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘চব্বিশের অভ্যুত্থানে ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের
ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।তিনি
বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা আকবর কবির একবার বলেছিলেন, এই সাংবাদিক সম্প্রদায়
পুরোপুরি বিবেকবর্জিত, চরিত্রহীন ও ক্রয়যোগ্য। কিন্তু আমি বলব, সাংবাদিকতা এমন
একটি পেশা যেখানে সব জানতে হয়, সব বুঝতে হয়।সাংবাদিকের
কাজ সত্য বলা, সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলা। দুঃখজনকভাবে, গত ১৫ বছরে শেখ
হাসিনা সরকারের আমলে প্রায় ৭০ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, দুই হাজারের বেশি
সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সিনিয়র সাংবাদিক আবুল আসাদের মতো মানুষকেও
তার নিজের চেম্বারে নির্যাতন করা হয়েছে।’তিনি
আরো বলেন, ‘সংবাদ হলো মানুষের খবর ও চিন্তার কালেকশন।আর পত্রিকা হলো সমাজের
আয়না, সমাজের প্রকৃত দর্পণ। শাসক সমাজ সংবাদ দেখলে ভীত হয়, কারণ সংবাদপত্র সমাজের চতুর্থ
স্তম্ভ। এই চতুর্থ স্তম্ভটি বাংলাদেশে মারাত্মকভাবে অবমানিত হয়েছে। সংবাদপত্র হলো সাধারণ
মানুষের স্কুল। পৃথিবীতে অনেক প্রাণী আছে, যাদের কোনো স্কুল নেই। তারা
প্রকৃতির পাঠশালা থেকে শিক্ষা নেয়। তেমনি সংবাদপত্রই হলো মানুষের প্রকৃত পাঠশালা,
যেখানে সমাজ প্রতিনিয়ত শেখে ও নিজেকে গড়ে তোলে।’এ
সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল-আওয়াল বলেন, ‘নলেজ ইজ পাওয়ার। যার যত বেশি
নলেজ (জ্ঞান) থাকবে, সে তত বেশি আলোকিত হবে। আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও
আত্মমর্যাদার ক্ষেত্রে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা এখানে যোগদানের পর
বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য কাজ করছি। আমাদের মধ্যে জটিলতা বেশি।
নিজের স্বার্থকে সবসময বড় করে দেখি; সে জন্য আমরা জাতিগতভাবে পিছিয়ে আছি। একটি
জাতিকে ধ্বংস করার জন্য মোক্ষম মাধ্যম হলো শিক্ষা। গত ১৭ বছরে শিক্ষাকে পিছিয়ে
দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভালো চিন্তা থাকতে হবে এবং দায়িত্ব নিতে হবে; তাহলে দেশ
ভালোভাবে পরিচালিত হবে। পূর্বের বাংলাদেশ দেখতে চাইনা; একটি সুন্দর আগামীর
বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করছি। তিনি
আরো বলেন, ‘সৎ মানুষ আয়না দেখতে ভয় পায় না। সবার সহযোগিতায় সহনশীল ও সাম্যের
বাংলাদেশ গড়তে চাই।’কোষাধ্যক্ষ
অধ্যাপক ড. মো. শামীম আহসান বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের শক্ত ভূমিকা
না হলে, অর্জন আরো কঠিন হতে পারত। ইতিহাসের সঠিক তথ্য তুলে ধরতে হবে। আমাদেরকে রোল
মডেল হতে হবে।’পাবিপ্রবি
প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রেসক্লাবের সাধারণ
সম্পাদক নাজমুল হুদা শিথিলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন— দৈনিক
যুগান্তরের সহসম্পাদক এমদাদুল হক, ইত্তেফাকের রাজনীতি ও নির্বাচন-বিষয়ক সম্পাদক
মো. সাইদুর রহমান, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, প্রেসক্লাবের
সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রেসক্লাবের সদস্যসহ
শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শেষে
প্রেসক্লাবের উদ্যোগে প্রকাশিত ‘বিপ্লবের দিনলিপি’ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন
অতিথিরা।
কপিরাইট © ২০২৫ ধ্রুবকন্ঠ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত