নোয়াখালীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াছিন আলম রকির মামা বাহিনীর সদস্য ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী সিরাজ (৫০) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রবিবার (১০ আগষ্ট) রাতে নোয়াখালী সদর উপজেলার ০৯ নং কালাদরাপ ইউনিয়ন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সিরাজ সদর উপজেলার ০৯ নং কালাদরাপ ইউনিয়নের ০৪ নং ওয়ার্ডের উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামের মিজান মাঝির ছেলে।
আওয়ামিলীগ নেতা ও নোয়াখালী ০৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর আশীর্বাদপুষ্ট মামা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, দখল, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারির কাজ করতো। মামা বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে এবং আওয়ামিলীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় সিরাজ এলাকাতে নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে বেড়াতো এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো। এছাড়াও এলাকাতে মাদক কারবারির সঙ্গে ও যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ০ ৫ আগষ্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সিরাজ অনেকদিন পলাতক থাকলেও এ বছরের শুরুতে আবার এলাকায় ফিরে আসেন। গত ৯ জুন গাঁজা খাওয়াকে কেন্দ্র করে বাধা প্রদান করলে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সিরাজের সন্ত্রাসী বাহিনী স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আব্দস সহীদ কে তার দোকানঘরে ডুকে অতর্কিত হামলা করে। এরই জের ধরে পরেরদিন ১০ জুন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সিরাজের সন্ত্রাসী বাহিনী পুনরায় তার দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় দোকানের পেছনে থাকা ১৬০ সিসির একটি হুন্ডা লুট করে নিয়ে যায় এবং দোকান ও দোকানের পেছনে আব্দুস সহীদের বোনের বাড়িতে হামলা করে ফ্রিজ, টিভি, নগদ টাকা, দোকানের মালামাল সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী আব্দুস শহীদ বাদী হয়ে গত ১৬ জুন সুধারাম মডেল থানায় একটি অভিযোগ পত্র দায়ের করেন।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলার প্রেক্ষিতে অনেক দিন ধরে মামা বাহিনীর সদস্য ও সন্ত্রাসী সিরাজ কে খুঁজছিলো পুলিশ। অবশেষে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে তাকে আটক করা হয়। বর্তমানে সে থানা হেফাজতে রয়েছে।
ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী আবদুস সহীদ বলেন, সিরাজ আমার উপরে হামলা করেছে এবং আমার দোকান ও বোনের বাড়িতে লুটপাট করেছে, ১৬০ সিসির মোটরসাইকেল নিয়ে গেছে। এলাকার সবাই জানে তার কাছে অস্ত্র আছে এবং সে মাদক কারবারের সাথে যুক্ত। আমি তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। তাকে গ্রেফতারের পর তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমুহুর্তে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিয়মিত মামলার আসামী হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামীকে আগামীকাল নোয়াখালী চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক: মোঃ ফয়সাল | প্রকাশক: এইচ এম শাহ পরান | বিভাগীয় প্রধান (অনলাইন): ইমরান হোসেন